বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জামায়াত ও দলটির অঙ্গসংগঠন শিবিরকে ভারত থেকে অস্ত্র সরবরাহ করা হয় বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।

খবরে বলা হয়েছে, ভারতের মুঙ্গের এলাকা থেকে প্রথমে উত্তর২৪পরগনার কাঁকিনাড়ায় এবং পরে মালদহের কালিয়াচক থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে হস্তান্তর হয় অবৈধ অস্ত্র।
জালনোট কারবারিদের উৎস খুঁজতে গিয়ে ভারতের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র উৎপাদনের কারখানার সন্ধান পেয়েছে বলে প্রশাসনের সূত্র খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে জালনোট চক্রের উৎপাদিত ভারতীয় নোট এই একই রুট দিয়ে ভারতীয়দের কাছে পৌঁছে যায়।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, কাঁকিনাড়ায় অস্ত্র তৈরির অবৈধ কারখানায় উৎপাদিত পিস্তলের ৮০ শতাংশই বাংলাদেশিদের কাছে বিক্রি করা হয়।

এজন্য মালদহ জেলার কালিয়াচকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে অস্ত্র এসেম্বলি কারাখানা তৈরি করেছে এই চক্র। ওই কারখানায় অস্ত্র এবেম্বেল এবং পলিশ করা হয়।

মালদহের আটক হওয়া জালনোট কারবারিদের সূত্র ধরে সোমবার অস্ত্র কারখানার হদিস পান কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) গোয়েন্দারা। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, আমরা খবর পেয়েছিলাম, মালদহ থেকে জালনোট এনে এখানে পরীক্ষা করে দেখবে এক জালনোট কারবারি। সেই সূত্র ধরেই কালিয়াচকের শুকু শেখকে পাকড়াও করা হয়।

তাকে আটক করার পর কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। শুকুর কাছ থেকে ৪০ পিস্তলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। শুকুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর খোঁজ পাওয়া যায় অপর দুই অস্ত্রকারবারি আমজাদ রায়ান এবং আবদুল্লা। এদের কাছ থেকেই খোঁজ মেলে কাঁকিনাড়ার অস্ত্র কারখানার।

এসটিএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারখানা থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। ডায়েরিতে যা লেখা রয়েছে তাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এখানে তৈরি হওয়ায় প্রায় সব অস্ত্র চলে যায় বাংলাদেশে।

গোয়েন্দা সংস্থার মতে, গত কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে এই কারখানায়। মাসে প্রায় ৫০০টি পিস্তল তৈরি করা হতো এখানে।

ভারতীয় গোয়েন্দারা বলেন, ছোটখাটো দুষ্কৃতীদলের পক্ষে এত অস্ত্র একসঙ্গে কেনা প্রায় অসম্ভব। তাই এরা যখন এত অস্ত্র নিয়মিত মালদহে পাঠাত, তার থেকে এটা অনুমান করা যায়, এদের ক্রেতা কোনো বড় গোষ্ঠী।

গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, উৎপাদিত এসব অস্ত্র বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলাম ও তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরের হাতে চলে যায়।এছাড়া এসব অস্ত্র দেশটির বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতেও চলে যায়।