জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ জুলাই ৩১, ২০১৮ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 602 বার
বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে স্কুল-কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো ঢাকা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর-অবরোধ-বাসে আগুন দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে পুলিশের লাঠিচার্জেরও ঘটনা ঘটে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কোথাও কোথাও।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়ে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা হিমাচল পরিবহনের বাসে অাগুন ধরিয়ে দেয়। উত্তরা হাউজ বিল্ডিং মোড়ে বাসে অাগুন দেয় শিক্ষার্থীরা। সেখানে এনা পরিবহেণের দুইটি বাস ও বশরা পরিবহণসহ অন্তত অর্ধশত বাস ভাংচুর হয়েছে। এ অবস্থায় ছাত্ররা রাস্তায় একটি ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
ধানমণ্ডির মিরপুর রোড, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, বনানী, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের দারুসসালাম রোডসহ কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করে। এসব এলাকায় অসংখ্য বাস ভাঙচুর করা হয়। একদল শিক্ষার্থী ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের পাশে রেললাইনেও অবস্থান নেয়। এতে নিরাপত্তাজনিত কারণে দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকার সঙ্গে সব ধরনের রেল চলাচল বন্ধ রাখে রেল কর্তৃপক্ষ। দুপুরে ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোজাম্মেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কাকরাইলে স্কুল শিক্ষার্থীরা সড়ক আবরোধ করেছে। সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীতে বিক্ষোভে নেমেছে তারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই কাকারাইলে মোড়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়।
তাদের এই অবস্থানের ফলে মালিবাগ, মৌচাক, পল্টন, বাংলামটর, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর, শান্তিনগর সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন চলাচলা করতে পারেনি সকাল থেকে। যান চলাচল করার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর চালায়।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা : বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভরত রাহাত, মুনতাহিনা, তানজিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, এভাবে আন্দোলন না করলে হত্যা চলতেই থাকবে। অবরোধের সময় ৯ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছে—নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, বাসচালকদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি, লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি চালানো বন্ধ, ঘটনাস্থলে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরা বলে, বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। এসব দাবি আদায়ের জন্য তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। এ সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ফের আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা।
পুলিশ কর্মকর্তারা বারবার শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোথাও শিশু-কিশোরদের ওপর চড়াও হয়নি পুলিশ। বিকেল ৪টার দিকে র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শিক্ষার্থীদের বিমানবন্দর সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানায়। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইট-পাথর ছুড়তে থাকে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। এরপর সাড়ে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা চলে যায়। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যান চলাচল শুরু করে।
Leave a Reply