যুক্তরাষ্ট্রে তখন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। সংক্রমণ ঠেকাতে বিধির কথা বলে মেক্সিকো সীমান্তে লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটকে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট আড়াই বছর আগের সে অভিবাসন নীতি বহাল রাখতে মঙ্গলবার একটি রুল জারি করেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে কার্যকর করা অভিবাসনবিষয়ক বিতর্কিত সেই নীতি বহাল রাখতে সর্বোচ্চ আদালত থেকে নির্দেশ আসায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর রাজনৈতিক চাপ আরও বাড়ল। কারণ, অভিবাসন নিয়ে এই নীতি বাতিল হচ্ছে বলে ধারণা ছিল জো বাইডেন প্রশাসনের।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বর্তমানে যেসব বিচারপতি আছেন, তাঁদের বেশির ভাগ রিপাবলিকান মনোনীত। অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে সতর্ক করে আদালতে ১৯টি অঙ্গরাজ্যের করা পিটিশন আমলে নিয়ে এই রুল দিলেন আদালত। পিটিশনে বলা হয়, ২০২০ সালের মার্চের ওই নীতি নিম্ন আদালতে বাতিল কতটা যৌক্তিক।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রণীত এই নীতির নাম ছিল টাইটেল ৪২। এই নীতির আওতায় সীমান্তে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফিরিয়ে দেওয়ার কর্তৃত্ব পায় সরকার। এমনকি যাঁরা আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য, তাঁদেরও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রুলও স্থগিত থাকবে। পরবর্তী শুনানি হবে ফেব্রুয়ারিতে।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সংখ্যা ৯ জন। এর মধ্যে পাঁচজন রুলের পক্ষে ও চারজন বিপক্ষে ছিলেন। রুলে বলা হয়েছে, ‘অঙ্গরাজ্যগুলো জানিয়েছে, সীমান্তে হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী নিয়ে তারা সংকটে পড়েছে। বিষয়টি সমাধানে নীতিনির্ধারকেরা একটি যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন এ সংকট সমাধানে একটি উপায় অবশিষ্ট আছে। সেটি হলো সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে ফেডারেল সরকারকে সরাসরি নির্দেশ দিয়ে এ নীতি যত দিন পারা যায় রাখতে বলা।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ট্রাম্পের সময়কার বিতর্কিত এই অভিবাসন নীতি বাতিল করতে চায়। বাইডেন প্রশাসন আশা করেছিল এটি আদালতে বাতিল হবে। কিন্তু আদালত এই নীতি বহাল রাখার পক্ষে রুল দিলেন। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য মে বা জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের রুলের পর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারিন জ্যাঁ পিয়েরে বলেন, ‘ফেডারেল সরকার আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে এবং পরবর্তী শুনানির জন্য প্রস্তুতি নেবে। একই সঙ্গে টাইটেল ৪২ যখন বাতিল হবে, তখন নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও মানবিক উপায়ে সীমান্ত পরিচালনার প্রস্তুতি আরও ত্বরান্বিত করা হবে।’