ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ‘উপহার’ পাঠিয়ে কৌশলে টাকা আদায়ের অভিযোগে রাজধানীতে চারজন বিদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কাওলা ও বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঘানা ও নাইজেরিয়ার নাগরিক। তাঁরা হলেন: সিসম, মরো , মরিসন ও অ্যান্থনি। তাঁদের কাছ থেকে ছয়টি বিভিন্ন মডেলের মুঠোফোন, বেশ কিছু সিম উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা। তিনি বলেন, প্রতারণার শিকার কাফরুলের বাসিন্দা খায়রুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চারজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
প্রতারণার শিকার খায়রুল জানান, একজনের সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। বন্ধুত্বের একপর্যায়ে তাঁকে উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে তাঁর নামে ‘উপহার বাক্স’ পাঠানো হয়। ওই বাক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রী আছে বলে ওই খায়রুলকে বলা হয়। খায়রুলকে শুল্ক গুদাম থেকে ‘উপহার’ গ্রহণ করতে বলেন প্রতারকেরা। সহযোগীদের মাধ্যমে একজন প্রতারক নিজেকে শুল্ক কমিশনার পরিচয় দিয়ে শুল্কসহ বিভিন্ন ব্যাংকে ৫৫ হাজার টাকা জমা দিতে চাপ দেন খায়রুলকে। টাকা জমা না দিলে তাঁকে আইনি জটিলতার ভয় দেখায় প্রতারক চক্রটি।

সিআইডির কর্মকর্তা জান্নাত আরা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা গত কয়েক বছরে সারা দেশে অসংখ্য ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাঁরা বাংলাদেশে অবস্থান এ ধরনের প্রতারণা করে আসলেও এ দেশে থাকার তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। গ্রেপ্তারকৃতরা পর্যটক, খেলোয়াড়, বিজনেস ও ছাত্র ভিসায় বাংলাদেশে এসেছিলেন। পরে তারা স্থানীয় কিছু এজেন্টদের সহায়তায় এ ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাংক হিসাবগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ভুক্তভোগী খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে কাফরুল থানায় প্রতারণার মামলা করেন। প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি প্রতারকদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিজ্ঞাপন
সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে আজ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের যাচাই বাছাই শেষে পরে তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে সিআইডি।
এর আগে জুলাইয়ে একই অভিযোগে নাইজেরিয়ার ১৬ জন নাগরিকসহ মোট ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা এখন কারাগারে রয়েছেন।