সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলার পূর্ব প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। এর মধ্যে ভোলার মনপুরার চর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোর ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় উপকূলের অভিমুখে সামান্য এগিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আরও শক্তিশালী হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি ১ হাজার ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী জানান, বরিশাল বিভাগে এবার আগের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ৪৯৭২টি সাইক্লোন শেল্টার তৈরি আছে।

তিনি বলেন, সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে বিকল্প আলো, স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। আগামী দুই দিসের মধ্যে অন্তত ৮০ ভাগ ধান কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের নিয়ে যতটুকু সম্ভব খেতের পাকা ধান কাটতে হবে।

ভোলার দূরবর্তী চর থেকে মনপুরায় লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক। মনপুরা উপজেলায় অন্তত পাঁচ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, বরিশাল বিভাগে এখনো ৩৮ ভাগ ধান জমিতে আছে। এর মধ্যে ২৬ ভাগ ধান কাটার উপযোগী হলেও ১২ ভাগ ধান কাঁচা। বিভাগে সবচেয়ে কম ধান কটা হয়েছে বরিশাল জেলায়। এখানে মোট ৫৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। পিরোজপুরে ৬৭ ভাগ ঝালকাঠিতে ৫৫ ভাগ পটুয়াখালীতে ৭০ ভাগ বরগুনাতে ৬৯ ভাগ, ভোলায় ৬৮ ভাগ ধান কাটার কাজ হয়েছে।

ধান কাটার জন্য গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকিং করা হয়েছে।

বরিশালের জেলা জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান জানান, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার মেঘনার তীরের এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় ১০৮৯টি আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে যেখানে অন্তত দুই লাখ ৩৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।