মহামারী করোনাভাইরাসে মানুষ যখন আতংকে দিনাতিপাত করছে। দেশ যখন করোন সংক্রমণ প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে। ঘরবন্দী হয়ে কর্মহীন হয়ে পরেছে সাধারণ মানুষ ঠিক সেই মুহূর্তে কর্মহীন হয়ে পড়া এক বাউলের গানের ঘর দুষ্কৃতীদের দেয়া আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দিবাগত রাত ১ টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামের বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের অন্যতম শিষ্য রণেশ ঠাকুরের বাড়ীতে।

এবিষয়ে বাউল শিল্পী রণেশ ঠাকুর গণমাধ্যমকে জানান , রাত ১ টার দিকে প্রতিবেশি মহিলার চিৎকার শোনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি আমার গানের ঘরে আগুন লেগেছে। পরে সবার সহযোগীতায় আগুন নিভাতে রাত ৩ টা বেজে যায়। আগুনে আমার সকল বাধ্যযন্ত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার এই ঘরে মেইন ঘর মেরামত করার জন্য অনেক দামে কাট, টিন কিনে রেখে ছিলাম সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।

সোমবার বিকেলে দিরাই‌ উপজেলার উজানধল গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ।

এসআই জ‌হিরুল ইসলাম জানান, আগের রাতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে বাউলের দোতারা, বেহালা, হারমো‌নিয়ামসহ গান গাওয়ার সব যন্ত্রপাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরের একপাশে দুটো ভেড়া ছিল। এগুলো বের করে দিয়ে আগুন ধরানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।

স্থানীয়রা জানান, রণেশ ঠাকুরের বসত ঘরের উল্টোদিকে তার বাউল গানের ঘর। ওখানেই তার ও শিষ্যদের বাদ্যযন্ত্র থাকত। রবিবার ১টার পর রণেশ ঠাকুরের বড় ভাইয়ের স্ত্রী আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে থাকেন।

অন্যরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন গানের ঘর পুড়ে যাচ্ছে। পরে আশপাশের লোকজন চেষ্টা করে আগুন নেভালেও পুরো ঘরই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

রণেশ ঠাকুর জানান, গ্রামের বা আশপাশের কারও সঙ্গেই তার কোন শত্রুতা নেই। কারা যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বুঝতেই পারছেন না।

বাউল সম্রাট শাহ্ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, আগুনে রণেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বই-পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।