দুর্নীতির মামলায় ২ বছর এক মাস ১৭ দিন কারবন্দি থাকার পর বুধবার দুপুরে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তিনি মুক্তি পান তিনি। দুই বছর এক মাস ১৬ দিন পর তিনি মুক্তি পেলেন। মুক্তির পর তাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে নিয়ে গুলশানের বাসভবনে যান ।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। পরে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।

সাজা হওয়ার পর প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিএনপির পক্ষ থেকে গতকালই নেতাকর্মীদের উপস্থিত না হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এমন নিষেধাজ্ঞার পরও হাজার হাজার নেতাকর্মী আজ বুধবার দুপুর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হন। এসময় অনেকেই মাস্ক পরে এলেও বেশিরভাগই ছিলেন অনিরাপদ অবস্থায়। এসময় উৎসুক নেতাকর্মীদের সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়।

এর আগে গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শর্ত দুটি হচ্ছে নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়া এবং দেশের বাইরে গমন না করা।

আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমার কাছে একটা দরখাস্ত এসেছিল। সেখানে লন্ডনে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি চাওয়া হয়। এরপর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার, তার বোন সেলিমা ইসলাম, তার বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ আবেদনের ব্যাপারে কথা বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য কিছুক্ষণ আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠিয়েছি আমি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায়, মানবিক কারণে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সময়কালে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না।