অবসান প্রতিক্ষার হলো। সৌদি আরবের রাজপথে গাড়ি চালাচ্ছেন দেশটির নারীরা- এমন স্বপ্নের বাস্তব রূপ পেলো ঘড়ির কাঁটায় শনিবার মধ্যরাত থেকেই। এদিন রাতে দেশটির রাজধানী রিয়াদের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় নারীদের গাড়ি চালাতে দেখা গেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা দেশটির ইতিহাসে নাম লেখালেন। এই দিনটির জন্য নারী অধিকারকর্মীদের লড়তে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর। তিন দশকের লড়াইয়ে অর্জিত এই অধিকার নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে বলে মনে করেন দেশটির প্রতিষ্ঠিত নারীরা।
দেশটির রাজধানী রিয়াদসহ প্রধান প্রধান শহরে শনিবার মধ্যরাতে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নেমে পড়েন নারীরা। বিভিন্ন শহরে ড্রাইভিং সিটে বসে দিনটি উদযাপন করেছেন তারা।

রিয়াদে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া প্রথম গ্রুপের নারীদের মধ্যে সালমা রাশিদ আলসানিয়াদ অন্যতম। শনিবার মধ্যরাতের পর তিনি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। সালমা বলেন, এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই দিনটি অবশেষে এলো! এজন্য আমি খুবই উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ অনুভব করছি। আসলেই একটি স্বপ্ন সত্যি হলো। আমি আমার দেশের রাস্তায় গাড়ি চালাতে পেরে আনন্দিত।

গাড়ি চালাতে পেরে আনন্দে ভাসছেন এক নারী। আল খোবার, সৌদি আরব। ২৪ জুন। ছবি: রয়টার্স
গাড়ি চালাতে পেরে আনন্দে ভাসছেন এক নারী। আল খোবার, সৌদি আরব। ২৪ জুন। ছবি: রয়টার্স
নিষেধাজ্ঞা পেছনে ফেলে গতকাল শনিবার মধ্যরাতে চালকের আসনে বসে গাড়ি চালিয়েছেন সৌদি নারীরা। এই দিনটির জন্য নারী অধিকারকর্মীদের লড়তে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর। তিন দশকের লড়াইয়ে অর্জিত এই অধিকার নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে বলে মনে করেন দেশটির প্রতিষ্ঠিত নারীরা।

২৩ বছরের মাজদুলিন আল-আতিক জীবনে প্রথমবারের মতো তাঁর কালো রঙের লেক্সাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন রাজধানী রিয়াদের রাস্তায়। বাঁধভাঙা আনন্দ ভাসছিলেন তিনি। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। আমি খুব খুশি…এখন এই মুহূর্তে গাড়ি চালাতে পারে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে।’

গতকাল পর্যন্ত কয়েক দশক ধরে সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। কিন্তু তরুণ মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হয়ে তাঁর দেশকে আধুনিক করতে নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেন। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাদশাহ নারীদের গাড়ি চালানোর সুযোগ দেওয়াসংক্রান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর নারীর গাড়ি চালানোর অধিকারের পথ সুগম হয়।