বাংলাদেশের বেনাপোল স্থল বন্দরে করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে- এমন গুজবে দিনভর বেনাপোল স্থল বন্দরে তোলপাড় হয়েছে। আর এই গুজব ছড়ানোর পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন স্থল বন্দরে দায়িত্বরত কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরী। তিনি নিজ দায়িত্বে ফেসবুকে এ খবরটি ছড়িয়ে দেন। নিজের ফেসবুক পেজে এক তরুণের পাসপোর্ট ও ছবি প্রকাশ করে তিনি লেখেন, করোনা রোগী শনাক্ত। পরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, খবরটি সম্পূর্ণ ভূয়া।

ভারত থেকে আসা কলকাতা-খুলনাগামী বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনে জহিরুল নামের এক তরুণ বাংলাদেশী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবরটি প্রচার করেন। জহিরুল জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি চীন থেকে ফেরেন। যেহেতু তিনি চীন থেকে সম্প্রতি ফিরেছেন সে জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই গুজব রটিয়ে দেন কাস্টমস কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কে ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একজন কাস্টমস কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণ শুধু অপেশাদারই নয়, নৈতিকতা বিরোধী। সংবেদনশীল সরকারি তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন সংক্রান্ত সরকারি চাকরি বিধির লঙ্ঘন। ডা. মীরজাদী বলেন, বাংলাদেশ এখনো ঝুঁকিমুক্ত। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এক শ্রেণীর মানুষ অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। যাতে করে মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও জোর-জবরদস্তির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গুজব ও জবরদস্তি সম্ভাব্য রোগী শনাক্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা ফেরত বন্ধন এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয় ঐ ফেসবুক স্ট্যাটাসে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত স্বাস্থ্য বিভাগের টিম ঐ যাত্রীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তবে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গ পায়নি।

এ প্রসঙ্গে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সচেতনতার জন্যই প্রথমে করোনা রোগী শনাক্তের বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। পরে চিকিত্সক দল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে ঐ যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস নেই। পরে আবার আপডেট স্ট্যাটাস দিয়েছি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছড়াইনি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চত করার জন্য আমরা তত্পর ছিলাম।

পাসপোর্ট যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষাকারী শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার আজিম উদ্দিন বলেন, ঐ যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গ ও লক্ষণ পাওয়া যায়নি।