ডিবিসি টেলিভিশনে টকশোর মন্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিন নারীকে হত্যার হুমকির অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।

গত ২৫ জানুয়ারি ‘উগ্রবাদ ও জেন্ডার সমতা’ নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজে নারীদের অধিকার ও সমসাময়িক নারী উন্নয়নমূলক আলোচনা অনুষ্ঠান ‘অন্যপক্ষ’ অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক ইশরাত জাহান উর্মির সঞ্চালনায় তাতে অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আরিফা রহমান রুমা।

গত ২৮ জানুয়ারি রাতে ‘ড. তুহিন মালিক’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টকশোর লিংক শেয়ার করে তিন নারীকে গণধোলাই দেওয়ার কথা বলা হয়।

এছাড়াও বাঁশেরকেল্লাসহ বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজেও এই লিংক শেয়ার করে তিন নারীকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য ও হুমকি দেওয়া হয়।

এরপর গত ২৯ জানুয়ারি হাজারীবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আরিফা রহমান রুমা।

তিনি জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘সাংবাদিক ইশরাত জাহান উর্মির সঞ্চালনায় ডিবিসি নিউজের টকশোতে আমি এবং মুক্তিযোদ্ধা ও নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির অংশ নেই। কথা প্রসঙ্গে তারেক মনোয়ারের বিভিন্ন মিথ্যাচারের সম্পর্কে কথা বলি। কোনও কোনও মাহফিলে কেউ কেউ নারীদের কটূক্তি করে বলেও উল্লেখ করি। এরপরই জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ফেসবুক পেজ বাঁশেরকেল্লা ও জামায়াত নেতা ড. তুহিন মালিক তার ফেসবুক পেজে আমাদের তিন জনকে গণধোলাই দেওয়ার আহ্বান জানায়। কেউ কেউ ফাঁসির দাবি করে। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

আরিফা রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমি বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নেই। তুহিন মালিক বিদেশে পলাতক থাকায় আপাতত তাকে গ্রেফতার করা না গেলেও এই ঘটনায় এরইমধ্যে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিরা সব পোস্ট ডিলিট করে দেওয়ায় তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তল্লাশি অব্যাহত আছে বলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাকে আশ্বস্ত করেছে।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করার পর আমরা তদন্ত শুরু করেছি। এরই মধ্যে হুমকিদাতা একজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।’

সাংবাদিক ইশরাত জাহান উর্মি এ বিষয়ে বলেন, ‘সেদিন আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘উগ্রবাদ ও নারীবাদ’। সমাজে নারীরা নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এই প্রতিবন্ধকতা বেশি সৃষ্টি করা হয়। ওয়াজ মাহফিলে নারীর বিরুদ্ধে অকথ্য কথাবার্তা আসে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এসব কথা বলা হয়। এবিষয়টি আমাদের তিনজনের আলোচনায় এসেছে। অনুষ্ঠান প্রচারের দুই-তিনদিন পর বিভিন্ন পেজ থেকে বাজে মন্তব্য আসা শুরু হয়।’

টকশো অনুষ্ঠানের প্রমোশনাল অংশ বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসির ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়েছিল। তবে সেটি কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে সরিয়ে নিয়েছে। উৎস -চ্যানেল আই