বিদেশ | তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 452 বার
৪৭ বছর পর দীর্ঘ রাজনৈতিক সংকট পাড়ি দিয়ে অবশেষে যুক্তরাজ্যের বহুল প্রতীক্ষিত ব্রেক্সিট ঘটল। আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৪৭ বছরের সদস্যপদ ছাড়ল যুক্তরাজ্য। এর জন্য গণভোটের তিন বছর পর নানা রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে এটি কার্যকর করতে সক্ষম হলো লন্ডন।
বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টায় যুক্তরাজ্যের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটি আসে। ব্রেক্সিটকে স্বাগত জানিয়ে উদ্যাপন অনুষ্ঠিত হলেও বিক্ষোভ করে এর বিরোধীরা।
ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে মোমবাতি জ্বালিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে স্কটল্যান্ডে। তারা গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে মত দিয়েছিল। এদিকে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে উৎসব করেছে ব্রেক্সিটপন্থীরা।
এদিকে ব্রেক্সিটের এক প্রতিক্রিয়ায় এক ঘণ্টা আগেই সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন: ‘অনেকের জন্য এই মুহূর্তটি বিস্ময়কর ও আশা জাগানিয়া মুহূর্ত, এমন একটি মুহূর্ত যেটি তারা কখনো আসবে বলে ভাবেনি।’
তিনি বলেন, ‘আবার অনেকেই রয়েছে যারা এক ধরনের ক্ষতি এবং শঙ্কা অনুভব করছেন। তৃতীয় একটি পক্ষও রয়েছে যাদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, তারা এখনো উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে যে, এই রাজনৈতিক সংকট কখনো শেষ হবে না।’
বরিস বলেন, ‘আমরা এই সব অনুভূতি বুঝি এবং সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্বটাও বুঝি। আমার দায়িত্ব হচ্ছে পুরো দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে সবাইকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
তিনি বলেন যে, ‘ইইউ তার সব শক্তিমত্তা এবং প্রশংসনীয় গুণাবলি দিয়ে গত ৫০ বছরে এমনভাবে বিকশিত হয়েছে যা আর এই দেশের জন্য উপযুক্ত নয়।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ রাতে বলার মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে এটাই যে, এটা কোনো শেষ নয় বরং শুরু মাত্র। এটি প্রকৃতভাবেই জাতীয় পুনর্জীবন এবং পরিবর্তনের একটি মুহূর্ত।’
আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও আগামী ১১ মাস অন্তর্বর্তীকালীন সময় বা ট্রানজিশনাল পিরিয়ড হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্য ইইউ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং ইইউকে অর্থ প্রদান করবে।
ব্রেক্সিটের ফলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যপদ হারাবেন যুক্তরাজ্যের এমপিরা। বন্ধ হবে যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাজ্য তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রি বা এসব কেনার জন্য নতুন নিয়ম ঠিক করতে বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারবে। এ ছাড়া পরিবর্তন আসবে পাসপোর্টের রঙেও।
‘ব্রিটেন এক্সিট’কে সংক্ষেপে বলা হয় ব্রেক্সিট। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া এটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি দেশ একে অন্যের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারে, নাগরিকেরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারে এবং সেখানে বসবাস করতে পারে।
গণভোটের আগে ৪৭ বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পর ২০১৬ সালের জুনে একটি গণভোট আয়োজন করে যুক্তরাজ্য। অধিকাংশ ভোটার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে ভোট দেন। এই ভোটের পর সেখানকার রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। যার ফলে পদত্যাগ করতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’কে।
Leave a Reply