অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ জানুয়ারি ২০, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 794 বার
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশ হেফাজতে আবু বক্কর সিদ্দিক বাবু (৪৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ভোর ৪টার দিকে থানা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তার স্ত্রী থানা হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ করলেও পুলিশ বলছে আবু বকর আত্মহত্যা করেছেন।
আবু বক্কর সিদ্দিক বাবু নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর চাদ উদ্যানে বসবাস করতেন। এছাড়া তিনি বিএফডিসি ফ্লোর ইনচার্জ হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে। গত শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার স্বজনরা।
আবু বক্কর সিদ্দিক বাবুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আলেয়া ফেরদৌসী অভিযোগ করেন বলেন, বাবুর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় গত রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে থানা পুলিশ তাকে ধরে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এ হত্যার বিচার চাই। বাবু সন্ত্রাসী বা স্মাগলার ছিল না। তবে পুলিশ বাবুকে গ্রেফতারের বিষয় কিছু জানায়নি বলে আলেয়া বলেন, আজ (গতকাল) সকাল ১১টার দিকে বাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে আসি।
এদিকে বাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। আবু সাইদ নামের এক সহকর্মী বলেন, বাবু বিএফডিসির ফ্লোর ইনচার্জ হিসেবে কাজ করতেন। সকালে তেজগাঁও থানা পুলিশ আমাদের অফিসে আসে এবং বলে বাবু আত্মহত্যা করেছে। বিস্তারিত কিছু বলেনি তারা। এর আগে গত রাতে থানা থেকে একটি কল আসে। তখন বলা হয়- বাবুর নামে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছে রোকসানা আক্তার মায়া নামের এক নারী। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এফডিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত পৌনে ৮টায় ফোনে পুলিশ আবু বক্কর সম্পর্কে জানতে চায়। এসময় আবু বক্কর সিদ্দিক এফডিসিতে চাকরি করেন বলে জানাই। পরে শুনেছি পুলিশ হেফাজতে তিনি মারা গেছেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, গতকাল ভোর ৪ টার দিকে বাবুকে পুলিশ অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। ময়না তদন্তের প্রতিবেন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আলী হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়া এবং ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক নারী বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে রাখা হয়। কিন্তু মধ্যরাতের পর হাজতের গ্রিলের সাথে ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানার পর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে মামলা আছে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর হাজতের গ্রিলের সাথে চাঁদর পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে হাজতে অন্য আসামি থাকলেও তারা কেউ টের পায়নি বলে জানান তিনি। হাজতের সামনে সেন্ট্রির দায়িত্বে কেউ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেন্ট্রিরা সাধারণত থানার গেটে থাকে। হাজতের সামনে কেউ ডিউটি করে না।
Leave a Reply