মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও যোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলীকে হত্যার চেষ্টাকারী দুই যুবককে দুই লাখ টাকার চুক্তির ভিত্তিতে ভবনে ঢুকতে দেন বাসার দারোয়ান হাসান। রিমান্ডে পুলিশকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে ঘটনার পর সাত দিন পেরিয়ে গেলেও মূল পরিকল্পনাকারী ডা. সারওয়ার আলীর সাবেক গাড়িচালক নাজমুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৫ জানুয়ারি রাতে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ১৪ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ির চারতলার ফ্ল্যাটে ডা. সারওয়ার আলীকে হত্যার চেষ্টা করে এক যুবক। আরেক যুবক তৃতীয় তলায় তাঁর মেয়ের বাসায় হানা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই রাতেই বাসার দারোয়ান হাসান ও গাড়িচালক হাফিজকে আটক করে।

এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ডা. সারওয়ার। মামলায় হাসান ও হাফিজ ছাড়াও ডা. সারওয়ারের সাবেক গাড়িচালক নাজমুলকে আসামি করা হয়। দুই দিনের রিমান্ড শেষে পরে হাসান ও হাফিজ এখন কারাগারে।

পুলিশ সূত্র জানায়, হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদকালে হাসান জানিয়েছেন, সাবেক গাড়িচালক নাজমুল ডা. সারওয়ারকে হত্যার জন্য হাফিজ ও তাঁকে দুই লাখ টাকা দিতে চাইলে লোভে পড়ে তাঁরা দুষ্কৃতকারীদের ভবনে ঢুকতে দিতে রাজি হন।

হাসান জানান, ঘটনার রাতে নাজমুল তাঁর কাছে আসেন। পরে নাজমুলকে নিয়ে তিনি টিভি দেখতে থাকেন। রাতে হামলাকারী দুই যুবক এলে নাজমুলের কথায় তিনি গেট খুলে দেন। দুই দুষ্কৃতকারী ওপরের দিকে উঠে যায়। তবে তাদের তিনি চেনেন না। একপর্যায়ে তিনি বাথরুমে যান। তবে ফিরে নাজমুলকে আর দেখতে পাননি।

ডা. সারওয়ার আলীকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়টি হাসান ও হাফিজ জানতেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, সাবেক গাড়িচালক নাজমুল তাঁদের জানিয়েছিলেন, সারওয়ার আলীর বাসায় অনেক টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে। এসব সম্পদ লুট করা হবে। এ কাজে সহযোগিতা করলে তাঁদের দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে।

ডা. সারওয়ার আলী গতকাল রবিবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মনে করি আরো গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ক্লুলেস একটি ঘটনার রহস্য এত দ্রুত উদ্ঘাটন হওয়া প্রমাণ করে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষ। আমি মনে করি তারা আরো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করলে এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা যাবে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাকে লক্ষ্য করে ছুরি ধরার সময় হামলাকারী লুট করবে—এমন কথা বলেনি। সে কারণে হামলাকারী হত্যা করতে এসেছিল—এমনটিই মনে হয়। আমি মনে করি, এ হামলায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।’

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘সাবেক গাড়িচালক নাজমুলসহ যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’উৎস -কালেরকন্ঠ