সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ইভিএমে ডেমো ভোটের আয়োজন করেন। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা ইভিএম যন্ত্রে ডেমো ভোটে অংশ নেন। এত দেখা যায়, ইভিএমে ফিঙ্গার প্রিন্টের পর একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারেন। ইভিএমের দুটি ইউনিটি। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। কন্ট্রোল ইউনিটের ভিতরে ভোটারদের তথ্য সম্বলিত একটি মেমোরি কার্ড থাকবে। কিন্তু কন্ট্রোল ইউনিটে একজন ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট অন্যজনে দিতে পারেন। কেননা, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গারের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যালট ইউনিটে তা নেই। তাই ইভিএমেও জাল ভোট দেয়ার সুযোগ আছে। দেখা গেছে, একজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ইভিএম মেশিন পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। আর ব্যালটের মতো ভোটকক্ষে উপস্থিত থাকেন বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্টরা। একজন ভোটার ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, স্মার্টকার্ড বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিলে তার নামসহ ছবি মনিটরে দেখা যায়।

কন্ট্রোল ইউনিটে ভোটার শনাক্তের পর তাকে ভোটদানের জন্য বিবেচনা করা হয়। এরপর তাকে ভোট দেয়ার জন্য ব্যালট ইউনিটে গিয়ে পছন্দের প্রার্থী বাছাই করে নিচের সবুজ কনফার্ম বাটন চেপে ভোট দিতে হবে। কিন্তু এই সময়ে ভোটকেন্দ্র প্রিজাইডিং অফিসার বা প্রভাবশালী প্রার্থীর এজেন্ট অনেক ক্ষেত্রে ভোটারকে সরিয়ে ব্যালট ইউনিটে নিজের পছন্দের প্রতীকে কনফার্ম বাটন চাপার সুযোগ পান। এভাবে সাংবাদিকেরা ইসির প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দেখিয়ে দেন ইভিএমে কীভাবে একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারেন। প্রদর্শনীতে কর্মকর্তারা দাবি করেন, ইভিএম মেশিনে জাল ভোট দেওয়া যায় না। ভোটারদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ব্যালট ইউনিট সচল করার পর তাকে ভোট দিতে না দিয়ে অন্য কেউ ঐ ভোট দিয়ে দিলে তা ঠেকানোর কোনো উপায় আছে কি না জানতে চাইলে, ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল মো. কামাল উদ্দিন বলেন, এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়। তবে ব্যালট ইউনিটে আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার পদ্ধতি নেই। ভোট রিভিউ করা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ি কেউ দেখতে চাইলে অমরা এটি দেখাতে পারবো। এরকম অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি এই প্রকল্প পরিচালক। ব্যালট ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট না থাকায় ইভিএমে ভোট অরক্ষিত কিনা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার পর ব্যালট ইউনিট ওপেন হওয়ার পর গোপন কক্ষে ভোটার নিজেই উপস্থিত থাকবেন। সেখানে তার সামনে অন্য কারো ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ব্যালটের চেয়ে ইভিএম প্রটেক্টেড, ব্যালটে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটার কেউ গেলো না, ব্যালট নিয়ে একাই জমা দিয়ে আসল। ইভিএমে সে সুযোগ নেই।