নোয়াখালীতে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জেলার সুবর্ণচর উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনকে (৩৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বুধবার দুপুরে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ সামস্উদ্দীন খালেদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে কয়েক মাস আগে সাময়িক বরখাস্ত করে।

২০১৫ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সুবর্ণচর উপজেলার ২নং চরবাটা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোজাম্মেল। নির্বাচিত হওয়ার পর দায়িত্ব নিয়েই তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর রাতে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে মারধর ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ৫ অক্টোবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। মামলায় রবিউল নামের অপর এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়। মামলাটি নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি দায়সারা গোছের তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়ায় পরবর্তীতে আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজনকে দিয়ে পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়। নোয়াখালী পুলিশ সুপার হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম ফারুককে মামলাটি পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেন। তিনি দীর্ঘ তদন্তের পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে জেলা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক।

আদালতের নির্দেশের তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। বুধবার দুপুরে মোজাম্মেল হোসেন নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক জেলা জজ মোহাম্মদ সামস্উদ্দীন খালেদ জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।