জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 415 বার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত ‘মোগো বাড়ি বরিশাল’ শিরোনামের একটি মিউজিক ভিডিও নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ওই মিউজিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বরিশাল নগরের কীর্তনখোলা নদীতীর সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে জুতা পায়ে নাচছেন এক তরুণী ও দুই তরুণ।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অবমাননাকর এমন কাণ্ড সামনে এলে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত থেকেই ফেসবুকে বিষয়টি পোস্ট করে নিন্দা জানাতে থাকে সচেতন মহল।
জানা গেছে, ‘Marjia Mimi’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে শুক্রবার গানটি প্রকাশ পায়। এতে মিমি নামে এক তরুণীর সঙ্গে আরও দুই তরুণকে জুতা পায়ে বধ্যভূমিতে নাচ করতে দেখা যায়। প্রথমে বধ্যভূমিতে জুতা পায়ের অংশসহ মিউজিক ভিডিওটি ফেসবুকে প্রকাশ করা হলেও শনিবার (২৩ নভেম্বর) সেই ইউটিউব চ্যানেলে বিতর্কিত অংশটি আর দেখা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ সংস্কৃতিকর্মী ও উত্তরণের সভাপতি জুবায়ের হোসেন শাহেদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বরিশালকে পরিচিত করার নামে এই কুলাঙ্গারের দল নিজের দেশের স্বাধীনতারক্ষায় যারা আত্মত্যাগ করেছে তাদের অবমূল্যায়ন করছে। বধ্যভূমিতে জুতা পায়ে নেচে এই শিক্ষিত কুলাঙ্গারের দল কী পরিচয়ে পরিচিত করছে নিজেদের ও বরিশালকে! এই কুলাঙ্গারদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। তরুণ প্রজন্মকে নিজের দেশরক্ষায় যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা জানানো আমাদের দায়িত্ব, তা বোঝানো উচিত। বরিশালের জেলা প্রশাসক এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, বধ্যভূমির পবিত্রতা রক্ষায় উদ্যোগ নিন।’
বরিশাল নিউজ এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি ও কবি সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, ‘বরিশালকে তুলে ধরতে গিয়ে এখানকার ইতিহাস ঐতিহ্যকে বিকৃত করা কারও কাছ থেকেই কাম্য নয়। তার ওপর মহান মুক্তিযুদ্ধ মানেই তো বাংলাদেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের কোনো স্মৃতির প্রতি অবমাননা কাম্য নয়। ওই তরুণ-তরুণীদের উচিত ক্ষমা প্রার্থনা করা।’
বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ বলেন, ‘সংস্কৃতির নামে বধ্যভূমিতে অবমাননা কখনো আমরা সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা মেনে নিতে পারি না। কারণ এখানে জাতিস্বত্তার একটা ব্যাপার, অন্তরের একটা ব্যাপার রয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের জন্য এ বধ্যভূমি। মঞ্চে জুতা পরে উঠে ড্যান্স করবে, তা কাম্য নয়। অবশ্যই যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। পাশাপাশি যারা এটি করেছে তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
এছাড়া অনেক সংস্কৃতিকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রথম ভিডিও সরিয়ে সংশোধন করার পাশাপাশি এদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। নয়তো বুঝে নিতে হবে এদের পেছনে অন্য কেউ রয়েছে।উৎস -বাংলা নিউজ
Leave a Reply