বরগুনার পাথরঘাটায় রায়হানপুর ইউনিয়নের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৩ বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পাশাপাশি ভুক্তভোগী গৃহবধূর নিকট থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ইমাম হোসেন। তিনি উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রায়হানপুর গ্রামের মো: খলিল সরদারের ছেলে এবং লেমুয়া বাজারে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায়ী।

ধর্ষিতা ওই নারী জানান, গত তিন বছর পূর্বে তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই তার স্বামীর সহপাঠী ইমামের সাথে তার পরিচয় হয়। পরে ইমামের সাথে মোবাইলে কথা বলার একপর্যায়ে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে ইমাম বিয়ের কথা বলে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৩ বছর ধরে তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে ইমাম।

ওই ধর্ষিতা নারী আরো অভিযোগ করেন, প্রেমের নামে তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তার স্বামী ও ভাইদের বিদেশ থেকে পাঠানো কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ইমাম। সম্প্রতি তার স্বামী বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসলে বিষয়টি নিয়ে স্বামীর সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে তাকে তালাকা দেয় স্বামী।

তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী দেশে চলে আসার পর অভিযুক্ত ইমাম হোসেনও তড়িঘড়ি করে বিয়ে করে। একপর্যায়ে অভিযুক্ত ইমাম প্রেম ও টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে ওই নারীকে না চেনার ভান করেন। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী বরগুনা জেলা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর হোসেন জোমাদ্দারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

মো: রাজু শিকদার, মো: মিজানুর রহমান সাগর, ইউপি সদস্য মো: খলিলুর রহমান ও সাবেক ইউপি সদস্য মো: তারেকসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তারা বলেন, ওই প্রবাসীর স্ত্রীর অভিযোগ সত্য। ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত ইমামের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইমাম হোসেন জানান, ওই মহিলা আমার ব্যাংকে কাজ করতো। তবে তার সাথে আমার কোন রকম অবৈধ ‘সম্পর্ক নেই’। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য এই আভিযোগ আনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে শালিসের মাধ্যমে ৩শ টাকার স্টাম্পে লিখিত দিয়ে এর মিমাংসা হয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর হোসেন জমাদ্দার ঘটানার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এরকম একটি ঘটনার লিখিত অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। পরে আবার শুনেছি অন্য লোক দিয়ে মেয়ের সাথে আপোস-মিমাংসা করেছে অভিযুক্ত ইমাম।

পাথরঘাটা থানা পুলিশের ওসি মো: শাহাবুদ্দিন জানান, থানায় এরকম কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।