বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পেনের নাগরিক মারিয়া মিম ও অভিনেতা সিদ্দিকের বিয়ে হয় ২০১২ সালের ২৪ মে । ২০১৩ সালের ২৫ জুন তারা পুত্রসন্তানের বাবা-মা হন। সেই থেকে বেশ সুখের সংসার তাদের। দুজনের নিত্য দিনের সব আপডেট ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করতেন তারা। দুজনই তাদের ফেসবুক প্রফাইলে সন্তানকে নিয়ে দারুণ দারুণ ছবি পোস্ট করে জানান দিতেন বেশ চমৎকার আছেন তারা। কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের সুখের সংসারে বিচ্ছেদের সুর বেজে উঠেছে। দুজনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে গরম হয়ে উঠেছে শোবিজ পাতা।

গত কয়েকদিন ধরে মিডিয়ার আলোচিত ঘটনা এ দম্পতির সংসার ভাঙার খবর। গত তিনমাস ধরে নাকি আলাদা থাকছেন অভিনেতা সিদ্দিক ও মারিয়া মিম।

তাদের পরিবারে ছয় বছরের এক পুত্র সন্তান থাকলেও ভাঙ্গনের মুখে তাদের সংসার। ইতিমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে- কেন এই বিচ্ছেদ? তবে এবার মুখ খুলেছেন সিদ্দিকের স্ত্রী মারিয়া মিম।

প্রেমের টানে স্পেনের বিলাসী জীবন ছেড়ে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানের কাছে ছুটে এসেছিলেন মারিয়া। পরিবারের সম্মতি নিয়ে ভালোবেসেই ঘর বেঁধেছিলেন দু’জন। সেই ভালোবাসার ঘরে অন্ধকার নেমে এসেছে।

এদিকে বিচ্ছেদের আগে একে অপরের বিরুদ্ধে আনছেন নানা অভিযোগ। এর আগে সিদ্দিক জানান, কেবল মিডিয়ায় কাজ করতে না দেওয়াতে আলাদা থাকছেন মিম। সেই সঙ্গে মিমকে তিনি তার সংসারে ফিরে আসার আহ্বানও জানান।

অপরদিকে সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তার স্ত্রী মারিয়া মিমের। তিনি বলছেন, ‘শুধু মিডিয়ায় কাজ করতে না দেওয়াই কারণ নয়; সিদ্দিকের সঙ্গে সংসার না করার শত শত কারণ রয়েছে। এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা বললে গ্রেফতার হবেন সিদ্দিক।’

মারিয়া মিম বলেন, ‘সত্য কথা হলো, বিয়ের পর থেকে আমাদের মধ্যে মনের অ-মিল শুরু হয়। বিয়ের আগে আমার কোনো কিছু নিয়ে সিদ্দিকের আপত্তি ছিল না। কিন্তু বিয়ের পর সে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে থাকে। বিয়ের আগের সিদ্দিক আর বিয়ের পরের সিদ্দিকের মধ্যে মিল খুজে পেতাম না। সব মেয়েদের স্বপ্ন থাকে, তার স্বামী একজন ভালো মনের মানুষ হবে। পাশাপাশি একটা সুন্দর সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখে দু’জনে মিলে। আমি সেটাই চেয়েছিলাম মনে প্রাণে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিদ্দিক আমার সব কাজ নিয়ে অভিযোগ করে। আমি সব কিছু ছেড়ে দিতাম। যদি আমার স্বামী আমাকে মানসিকভাবে শান্তি দিতো ও ভালোবাসতো। সিদ্দিক ঠিক হয়ে যাবে, সুন্দর একটি পরিবার হবে- এই আশায় সাত বছর পার করলাম। সব সহ্য করে গেছি এতোদিন। তবে এখন অনুভব করছি, আসলে জোর করে কিছু হয়না। অন্তত সংসার-সম্পর্ক হয় না।’

মিম বলেন, ‘আমার পরিবার আর সিদ্দিকের সম্মানের কথা ভেবে ওর সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার করে যাচ্ছি। বিয়ের পর থেকে সিদ্দিক আমার সঙ্গে নানাভাবে প্রতারণা করে আসছে। তারপর ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসার করতে চেয়েছিলাম। সব কিছু তো আর বলা সম্ভব নয়, যদি বলতাম তাহলে এতদিনে ওকে জেলে থাকতে হতো।’

সন্তানের জন্য সংসারে ফেরার বিষয়ে মিম বলেন, ‘সন্তানের কথা ভেবেই এতোদিন চুপচাপ সব সহ্য করেছি। অথচ সে আমাকে সবসময় মানসিক টর্চারে রেখেছে। আমি তো একটা মানুষ। আমারও সঠিকভাবে বাঁচার অধিকার আছে। এত কষ্ট আর সহ্য হচ্ছিল না। ওর সংসারে আমার কোন স্বাধীনতা নেই। এখন সে আমাকে হুমকি দিচ্ছে বিভিন্নভাবে। তার নামে জিডিও করেছি। সে এখন আমার নামে মিডিয়ার সামনে মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। সব থেকে বড় কথা, আমার সন্তানের সঙ্গে আমাকে দেখা করতে দেয়না, কথা বলতে দেয়না। এটা একজন মায়ের জন্য কতটা কষ্টের তা কেবল মায়েরা বুঝতে পারবে। ঘরের মধ্যে সিদ্দিকের একরূপ, আর বাইরে তার আরেক রূপ।’