সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের দায় নিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেছেন, খাশোগি হত্যার দায় তার। কারণ, তার নজরদারি ও দায়িত্বের অধীনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এমন কথাই বলেছেন সালমান।

খাশোগি হত্যার এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আগামী ১ অক্টোবর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করবে সিবিএস। এরই একটি অংশবিশেষ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই খাশোগি হত্যার দায় নেওয়ার কথা জানান সালমান। তিনি বলেন, ‘এটা আমার নজরদারিতে ঘটেছে। সব দায় আমার, কারণ এটা আমার অধীনেই ঘটেছে।’ তার অজান্তে কিভাবে এই ঘটনা ঘটল জানতে চাইলে সালমান বলেন, ‘আমাদের ২ কোটি মানুষ আর ৩০ লাখ সরকারি কর্মচারী রয়েছে।’

হত্যাকারীরা সরকারি বিমান ব্যক্তিগতভাবে কীভাবে ব্যবহার করেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা এসব তদারকি করেন আর তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত। এটা করার এখতিয়ার তাদের রয়েছে।’

গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ও সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক জামাল খাশোগি। দুই সপ্তাহের বেশি সময় তার সম্পর্কে কোনো কিছু জানায়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ সময় তুর্কি সংবাদমাধ্যমগুলো সৌদির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ হাজির করতে থাকে। পরে চাপের মুখে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে খাশোগিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সৌদি সরকার। এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সৌদি যুবরাজ। সমালোচনার পর এখন পর্যন্ত তিনি ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেননি।

এর আগে তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরাসরি সৌদি যুবরাজের কাছ থেকে এসেছে বলে তাদের কাছে প্রমাণ আছে। খাশোগি হত্যায় সন্দেহভাজনদের বিচারের মুখোমুখি করতে অভিযুক্তদের প্রত্যর্পণের দাবিও করে আসছে তুরস্ক। কিন্তু তুর্কি কর্তৃপক্ষের এই দাবি অগ্রাহ্য করে সৌদি সরকার নিজ দেশেই ১১ কর্মকর্তাকে বিচারের মুখোমুখি করেছে। তবে বিচারের মুখোমুখি হওয়া ১১ জনের মধ্যে সৌদি যুবরাজের উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানির নাম নেই।

সৌদি সরকারের হাতে আটক ও খুন হওয়ার আশঙ্কায় স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই নির্মমভাবে খুন হন তিনি। এ ঘটনার এক বছর পূর্তির আগেই যুবরাজ সালমান ঐ হত্যাকাণ্ডের দায় নিলেন।