বগুড়া জেলার শিবগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্মাশান এর জায়গা দখলের মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে জনসম্মুখে ক্ষমা চেয়ে ব্যানার টানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। বুধবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শতবর্ষী ওই শ্মশানে ‘এই জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই’ উল্লেখ করে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। তবে শ্মশান কমিটির নেতারা বলছেন, আদালত স্পষ্ট করে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করলেও আদালতের নির্দেশ পুরোপুরি মানা হয়নি।উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক এই শ্মশানের বেশ কিছু জমিতে নিজস্ব ভবন নির্মাণ শুরু করলে প্রতিবাদ জানান স্থানীয় সনাতন ধর্মের বাসিন্দারা। পরে উচ্চ আদালতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে আদালত বিষয়টি আমলে নেয়। গত রোববার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই রিটের আদেশে আজিজুল হককে তার কৃতকর্মের জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানুষের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে শ্মশান এলাকায় একটি ব্যানার টানিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেন।আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন, ব্যানারে ‘শ্মশানের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ চেষ্টা করে আমি ভুল করেছি। এ ধরনের কাজ আর কোনদিন করবো না’-এই বাক্য লিখে ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ‘এই জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই’ উল্লেখ করা ব্যানার সাথে নিয়ে এসে সাংবাদিকদের সামনে ছবি তুলে এই ব্যানার সাথে করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে বানাইল শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র সরকার জানান, আদালত তার আদেশে স্পষ্ট উল্লেখ করেছিলেন, ব্যানারে ‘শ্মশানের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ চেষ্টা করে আমি ভুল করেছি। এ ধরনের কাজ আর কোনদিন করবো না’-এই বাক্য লিখে ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু উনি ব্যানারে সেসব উল্লেখ করেন নি। এসে শুধু আমাদের সঙ্গে কথা বলে অল্প সময়ের জন্য ব্যানারটা তুলে ধরলেন, সাংবাদিকরা ছবি তুললেন, তারপর তিনি সেটি সঙ্গে করে নিয়ে চলে গেলেন। কিন্তু আদালত ব্যানারটি টানানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন।

শ্মশান কমিটির সভাপতি শ্রীকৃষ্ণ মোহন্ত জানান, আদালত ব্যানার টানানোর পর এর ছবি এবং নির্দেশ কতটুকু পালন হয়েছে তা আগামী ২৭ মে আবার হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেছেন। তারপর পরবর্তী আদেশ আসার কথা।