মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে গণহত্যার উদ্দেশ্যেই রাখাইনের রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাশিশুদের ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়ন করেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলের প্রতিবেদনের উপসংহারে এ দাবি করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাখাইনে শত শত রোহিঙ্গা নারী ও মেয়ে সেনাবাহিনীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তথ্য প্রমাণ বলছে, ধর্ষণের ৮০ শতাংশ ঘটনাই ছিল উদ্দেশ্য প্রণোদিত। গণধর্ষণের যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার ৮২ শতাংশের দায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। গণহত্যার অভিযোগ উঠা ব্যক্তিদের ‘জেনোসাইড কনভেনশন’র অধীনে বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতার দায় মিয়ানমার সরকারের। মিয়ানমার সরকার জঘন্যভাবে নিজেদের দায় অস্বীকার করেছে। তদন্তকারীরা ইঙ্গিত দিয়েছে যে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের আওতায় নিতে তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে কয়েকটি সীমান্ত পুলিশ পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলার পর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়। ঐ বর্বর অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশি পালিয়ে আশ্রয় নিয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। পালিয়ে আসা নারীদের শরীরে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। এই অভিযোগ তদন্তের জন্য ঐ বছরই জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল বিভিন্ন দেশের তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত দল গঠন করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকেই রাখাইনে নারী ও মেয়েদের ওপর যৌন সহিংসতা শুরু হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে ধ্বংস করতেই সেখানে গণধর্ষণ চালায়। যুক্তিসঙ্গতভাবেই একে গণহত্যার ষষ্ঠ প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে আমরা আমাদের প্রতিবেদনের ইতি টানছি।

তদন্তকারীরা জানান, তারা সেনাবাহিনীর অভিযুক্ত অনেকের নামের তালিকা করেছে। এই তালিকা জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাশেলেটকে দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।