ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বেপরোয়া প্রাইভেট কারের চাপায় দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, শুক্রবার রাত প্রায় ২টায় বৃষ্টি থেকে বাঁচতে রাস্তার ধারের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিন বাংলাদেশি নাগরিক। সেই সময় একটি মার্সিডিজ বেঞ্জের সঙ্গে জাগুয়ার গাড়ির সংঘর্ষ ঘটে। এতে দুজন বাংলাদেশী নাগরিককে ধাক্কা মারে জাগুয়ার গাড়িটি। এতে নিহত হন ওই দু’জন।

গ্রেফতার করা হয়েছে জাগুয়ারের চালককে। ২২ বছরের আরসালান পারভেজ কলকাতার ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান বলে জানা গিয়েছে। পুলিশসূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পর সে পালিয়ে গিয়েছিল।

শুক্রবাররাতের এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন বছর ৩৫-এর কাজী মণিরুল আলম ও তানিয়া। তারা চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
মঈনুল আলম গ্রামীণফোনের রিটেইল সাপোর্ট ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। আর তানিয়া সিটি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকটির ধানমণ্ডি শাখায় কর্মরত ছিলেন।

রাতের খাবার খেয়ে তারা হোটেলে ফিরতে গাড়ি ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ছাউনিতে। সেই সমযই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। দুর্ঘটনায় জখম হন মার্সিডিজের চালক ও যাত্রীরাও।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়,গ্রেফতারকৃত আরসালান পারভেজ কলকাতার জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ আরসালান-এর মালিকের ছেলে। পারভেজকে শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় পুলিশ জাগুয়ারের চালকের বিরুদ্ধে প্রথমে ৩০৪এ ধারায় মামলা দায়ের করেছিল। যেটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হলেও জামিনযোগ্য ছিল। কিন্তু পারভেজকে গ্রেফতারের পর ৩০৪ ধারায় মামলা পরিবর্তন করে। এটি জামিন অযোগ্য ধারা।

শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার সময় পারভেজ আরসালানই চালকের আসনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবারা রাত ২টার দিকে একটি জাগুয়ার তীব্র গতিতে শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। লাউডন স্ট্রিটের কাছে সেটি একটি মার্সিডিজকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ট্রাফিক পুলিশের একটি পোস্টে ঢুকে পড়ে।

তুমুল বৃষ্টির মধ্যে মঈনুল, তানিয়া ওই পুলিশ পোস্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাড়িটি মঈনুল ও তানিয়াকে চাপা দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মঈনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার সময় পারভেজ আরসালানের জাগুয়ারটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলছিল বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।