জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আফতাব আহমেদকে নিজ বাসায় গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীর ২ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাড়ির ২য় তলার ফ্ল্যাট থেকে মফিকুল হাসা তৃপ্তিকে (৬৫) গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এনামুল কবির এমন খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইতোপূর্বে অধ্যাপক আফতাব হত্যা মামলার চার আসামী গ্রেফতার হয়। তাদের মধ্যে একজনের ঢাকার সিএমএম আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে মফিকুল ইসলাম তৃপ্তির নাম আসে। জবানবন্দিতে দেয়া তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হতেই তৃপ্তিকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোর্পদ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই জামিনে রয়েছেন। জামিনে থাকা অনেকেই আবার পালিয়ে বিদেশ চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য,২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে শিক্ষকদের আবাসিক ভবনে একদল দুর্বৃত্ত ঢুকে ড্রয়িংরুমে গুলি করে ভিসি ড. আফতাব আহমেদকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় ওই সময় রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। পরে মামলাটি পুলিশ ও ডিবি পুলিশের হাত ঘুরে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
ড. আফতাব আহমেদকে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তিনি ভিসি থাকাকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার খানেকেরও বেশী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। কয়েকজন বাদে তাঁদের প্রায় সবারই আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে চাকুরী চলে যায়। দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আর তাঁকে নিয়োগ দেননি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে আফতাব আহমেদ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কুৎসা রটানো ও বিষোদগার করেন।

২০০০ সালে জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় এবং শিক্ষক সমিতি থেকে বহিষ্কৃত হন। কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁর কলাভবনের কক্ষটি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তিনি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় নিলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।