বিদেশ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1022 বার
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের ওষুধ কোম্পানি আস্ট্রাজেনেকার তৈরি করা করোনা ভাইরাসের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পুনরায় শুরু হয়েছে।
টিকাটির চূড়ান্ত পর্যায়ের এই পরীক্ষায় যুক্তরাজ্যে একজন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় কয়েক দিন আগে এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল স্থগিত রাখা হয়।
ট্রায়াল ফের শুরু করার কথা জানিয়ে শনিবার আস্ট্রাজেনেকা বলেছে, আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো যাতে নিরাপত্তার দিকগুলো স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করতে পারে সেজন্য ৬ সেপ্টেম্বর ট্রায়ালের সব জায়গায় ‘ভ্যাকসিনেশন’ স্থগিত রাখা হয়।
নিরাপত্তা পর্যালোচনাকারীরা ব্রিটেনের মেডিসিনস হেলথ রেগুলেটোরি অথোরিটিকে (এমএইচআরএ) বলেছে যে, যুক্তরাজ্যে পুনরায় ট্রায়াল শুরু করাটা নিরাপদ।
আস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে এর তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৩০ হাজার অংশগ্রহণকারী যুক্ত আছেন। এই পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রায়ই কয়েক হাজার অংশগ্রহণকারী যুক্ত থাকেন এবং তা কয়েক বছর ধরে চলতে পারে।
যুক্তরাজ্যে যে অংশগ্রহণকারী অসুস্থ হয়েছেন তিনি মেরুদণ্ডে প্রদাহজনিত স্নায়ুবিক সমস্যা, যা ট্রান্সভার্স মায়েলাইটাস নামক রোগে ভুগছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে কেমব্রিজভিত্তিক আস্ট্রাজেনেকা ওই রোগী সম্পর্কে এর বেশি তথ্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
গত বছরের শেষে চীন থেকে ছড়াতে শুরু করে পুরো বিশ্ব দখল করে নেওয়া নতুন করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে পৌনে তিন কোটির বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে, এতে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখের বেশি মানুষের।
এ ভাইরাসের টিকা তৈরির চেষ্টায় বিশ্বে এখন প্রায় দুইশ গবেষণা চলছে। এর মধ্যে আধা ডজন সম্ভাব্য টিকা পৌঁছেছে পরীক্ষার একেবারে শেষ পর্যায়ে।
সেগুলোর মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-আস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও মডার্না, ফাইজার, ক্যানসিনো বায়োলজিক্যাল, সিনোভ্যাক বায়োটেক ও সিনোফার্ম তাদের তৈরি করা সম্ভাব্য টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাচ্ছে বিশ্বের কয়েকটি দেশে।
আর রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউট তাদের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ না করেই সরকারের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে।
কোনো টিকা চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার আগে বিপুল সংখ্যক রোগীর ওপর এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে হয়, যাকে বলে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল।
তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় সফল প্রমাণিত হলে ট্রায়ালে অংশ নেওয়া দেশগুলো ইমার্জেন্সি অথরাইজেশন দেয়। সবশেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয়টি আসে।
অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার এই টিকাকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডব্লিউএইচও’র চিফ সায়েন্টিস্ট বলেছেন, ট্রায়ালের এই সাময়িক বিরতিকে একটি ‘সতর্ক বার্তা’ হিসেবে নেওয়া উচিত যে, একটি টিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় উত্থান-পতন থাকবে।
Leave a Reply