জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 306 বার
সফররত অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিজ পেইন বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জোড়ালো সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
বৃহস্পতিবার সকালে মেরিজ পেইন রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে এ আশ্বাস দেন।
আজ থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া ৩য় আইওরা সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগদানের জন্য তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে প্রেস সচিব জানান ‘আমরা চাই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকরা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক।’
মেরিজ পেইন প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুয়সী প্রশংসা করেন।
অষ্ট্রেলিয়া মানবিক দিক বিবেচনায় আগামীতে আরো সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘আমরা এই ইস্যুটির সংস্পর্শে থাকতে চাই।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে এসব জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব জানান শেখ হাসিনা বলেছেন , ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ করেছি এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছি কিন্তু চুক্তির বাস্তবায়ন হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদেরকে অবশ্যই নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন,‘এটা আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা। ইতোমধ্যেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ নতুন শিশু জন্মলাভ করেছে।’
শেখ হাসিনা অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, তাঁর সরকার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য একটি দ্বীপের উন্নয়ন সাধন করেছে।
অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
ক্রিকেট প্রসঙ্গে কথা হলে মেরিজ পেইন, যিনি কিনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতই এই জনপ্রিয় খেলার একজন ভক্ত, তিনি বলেন, তাঁরা চান অস্ট্রেলীয় জাতীয় ক্রিকেট দল আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করুক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান,পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ৩য় আইওরা সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগদানে আগত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানগণ একই হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
তাঁদেরকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান বলে প্রেস সচিব উল্লেখ করেন। কনফারেন্স উপলক্ষ্যে আগত প্রতিনিধি দলের প্রধানগণ বাংলাদেশের আতিথেয়তার ভূয়শী প্রশংসা করেন এবং বলেন, সকল অংশগ্রহণকারী দেশই এই সম্মেলনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে।
সম্মেলনের মূল অধিবেশনে একটি প্রানবন্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং তাঁরা বলেন, তাঁরা এই সম্মেলনের ঢাকা ঘোষণাকে সমর্থন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী আশবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই আইওরা সম্মেলন ফোরামে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। যেখানে সাধারণ মানুষ বৈরী আবহাওয়া তথা সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস এবং নদীর ভাঙ্গনের সঙ্গে বসবাস করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছি- সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করেছি, স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য পৃথক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি এবং নদী খনন করেছি যাতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব হয়।’
তিনি বলেন,উপকূলে কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ বন সৃজন এবং সবুজ বেষ্টনি গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে দেশে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে’।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তাঁর সরকারের গৃহিত বিভিন্ন বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান এবং পররাষ্ট্র সচিব মো.শহীদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply