সদ্য বরখাস্ত হওয়া জামালপুরের বিতর্কিত ডিসি আহমেদ কবীরের অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে জামালপুরে গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তদন্ত দল জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়। তদন্ত দলের সদস্যরা ডিসি অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ প্রতিবেদন লেখার সময় তদন্ত দল ডিসি অফিসেই অবস্থান করছিলেন।

তদন্ত দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমান। এছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

আদেশে কমিটিকে প্রকাশিত ভিডিওটির সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। কমিটিতে প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক।

এর আগে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জামালপুরের ডিসি থেকে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ‘উদাহরণ সৃষ্টির মতো’ শাস্তির ব্যবস্থা হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট বিকেলে ‘খন্দকার সোহেল আহমেদ’ নামের একটি পাবলিক ফিগার ফেসবুক পেজ থেকে জেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চপদধারী এই সরকারি কর্মকর্তা তার অফিসেই একজন নারীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। ফেসবুক আইডি থেকে এটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ব্যাপক হারে নজরে আসতে থাকে ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারীদের কাছে। এদিকে শুক্রবার ভোররাত থেকে রহস্যজনক কারণে ওই আইডির ওয়াল থেকে ভিডিও লিংকটি সরিয়ে নেয়ায় সন্দেহ আরো দানা বেঁধে উঠেছে।

এমন ভিডিও প্রকাশ পাওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই ভিডিওটিতে যে কক্ষটি দেখা যাচ্ছে সেটি জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অফিস কক্ষে তার চেয়ারের ঠিক ডান পাশের ছোট একটি কক্ষ। ছোট এই কক্ষটিতে একটি ছোট খাট বসানো হয়েছে। কক্ষটি বেশ পরিপাটি দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটিতে পুরুষ ব্যক্তিটিই জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। আর যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তিনি এই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেই সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া একই অফিসের অফিস সহায়ক সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা।