রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় জামায়াতের নায়েবে আমীর ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আমৃত্যু কারাদন্ড প্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ১০৪ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় মোট ১১০জন আসামীর মধ্যে ৬জন বিভিন্ন সময়ে মারা গেছে। এর আগে বেলা ১১টার দিকে মাওলানা সাঈদীকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সরাসরি আদালতে নেয়া হয়। এ সময় আদালত চত্বরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে পুলিশ। এছাড়া আদালত চত্ত্বরে অবস্থান নেয় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট ক্রাইম রেসপন্স টিম-সিআরটি এবং র‌্যাব সদস্যরা।
শুনানির সময় সাঈদীর আইনজীবী ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদলতে আবেদন করেন। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিরাজী শওকত সালেহী এলেন জানান, ৭ ও ৮ অক্টোবর সাঈদীসহ জামায়াত নেতারা রাজশাহীতে থেকে ছাত্রলীগ নেতা ফারুককে হত্যার নিদের্শ দেন। তাই তাকে ৩০২ ধারায় হত্যামামলা এবং ১০৯ ধারায় হত্যার প্ররোচনা মামলা দাযের করা হয়।
তবে সাঈদী আদালতে কি বলেছেন এর জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, সাঈদী আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এই মামলায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে নিজেকে দাবি করেন তিনি।
তবে আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম জানান, ফারুক হত্যার আগের দিন জামায়াতের এক সমাবেশে সাঈদী ছাত্রলীগ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু হত্যার করা বলেন নি বা নির্দেশও দেননি। এমন কি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে তিনি চিনতেনও না। কাজেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখলকে কেন্দ্র করে জামায়াত সমর্থক ছাত্র শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর রাতে সশস্ত্র হামলা চালায়। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল ছাত্রলীগের কর্মী গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখা হয়।

এছাড়া ছাত্রলীগের চার নেতার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। ওই রাতে হামলায় আহত হন আরো ৪০ জন।এঘটনায় পরদিন নগরীর মতিহার থানায় জামায়াত এবং শিবির নেতাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন তৎকালীন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু।