গাজা উপত্যকা থেকে নিক্ষিপ্ত অন্তত দু’টি রকেট ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবে আঘাত হেনেছে। ইসরাইলের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী কথিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম ওই দুই রকেটকে শনাক্ত বা ভূপাতিত করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার রাতে ওই রকেটগুলো তেল আবিবের দিকে ধেয়ে আসতে থাকলে ইসরাইলের গোটা মধ্যাঞ্চল জুড়ে সাইরেনের তীব্র শব্দে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তারা তেল আবিবের শহরতলীর ‘গুশ ড্যান’ এলাকায় দু’টি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন।

আবার কেউ কেউ দাবি করেছেন, তারা আয়রন ডোম থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হতে দেখেছেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আয়রন ডোম শেষ মুহূর্তে সক্রিয় হয়ে উঠলেও দু’টি রকেটের একটিও ভূপাতিত করতে পারেনি।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী আয়রন ডোমের এই ব্যর্থতার খবর নিশ্চিত করেছে। তবে তারা এই ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিয়েছে একথা বলে যে, এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি স্বয়ংক্রিয় কৌশল হচ্ছে এটি যখন বুঝতে পারে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট ফাঁকা স্থানে পড়বে তখন এটি নিজে থেকেই সেটিকে পাশ কাটিয়ে যায়।

তেল আবিব ও ‘রিশন লেজিওন’ মিউনিসিপালিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গণ আশ্রয় কেন্দ্র খুলবে।

তবে রকেট আঘাত হানার ফলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে পাওয়া খবরে জানা গেছে। তবে সাইরেনের তীব্র শব্দের ফলে সৃষ্ট আতঙ্কের জের ধরে কয়েকজনকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হয়েছে। ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর এই প্রথম তেল আবিবে সাইরেন বাজল।

ইসরাইলি সেনা মুখপাত্র রনেন ম্যানেলিস বলেছেন, ফিলিস্তিনি রকেট এতটা পথ পাড়ি দিয়ে তেল আবিব পর্যন্ত আসবে বলে কেউ ধারনা করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, “গাজা থেকে এ ধরনের রকেট ছোঁড়া হবে বলে আমাদের কাছে কোনো আগাম খবর ছিল না। তাই এগুলো আমাদের বিস্মিত করেছে।”

বৃহস্পতিবার রাতের ওই রকেট হামলার পর ইসরাইলি বাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজায় তাদের ভাষায় সন্ত্রাসী অবস্থানগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো বলেছে, গাজা শহরের খান ইউনুস বন্দরের কাছে ইসরাইলি হামলা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি বিমান হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী বাহিনী।

ইহুদিবাদী ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সেনা সদরদপ্তরে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এক খবরে জানা গেছে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজা সফররত মিশরীয় নিরাপত্তা প্রতিনিধিদলকে ওই উপত্যকা ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। গাজা থেকে সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ইসরাইলি হামলার আশঙ্কায় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা তাদের সামরিক অবস্থানগুলো খালি করে দিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: পার্সটুডে