অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 582 বার
ঢাকার যাত্রাবাড়ী, ময়মনসিংহ ও কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া দুইটার দিকে দয়াগঞ্জে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাটি ঘটে।
ময়মনসিংহে ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে একজন। পুলিশের দাবি, নিহত রশিদ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ও বিস্ফোরকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
এদিকে টেকনাফে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল আলম (৩০) নামের এক ‘রোহিঙ্গা ডাকাত’ এবং বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বেল্লাল হোসেন (২৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে টেকনাফের দমদমিয়া ও সাবরাংয়ের কাটাবুনিয়া এলাকায় ঘটনা দু’টি ঘটে।
ঢাকা: পুলিশ জানায়, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হজরত আলী (৩৫) এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তার নামে ৫০টির বেশি মামলা রয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, দয়াগঞ্জ এলাকায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী অবস্থান করছে- খবর পেয়ে রাতে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ করে ককটেল ও গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১ হাজার ১০০ পিস ইয়াবা, ১টি ককটেল ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
ময়মনসিংহ: পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযানে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্যে করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রশিদ নামের একজনকে পাওয়া যায়। উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ডিবি পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের (৫০) পিতার নাম মোহাম্মদ রফিক। তারা ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা। অভিযানের সময় একটি পাইপগান ও ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফের দমদমিয়া: র্যাব জানায়, নিহত আলম নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের এইচ বল্কের মৃত মোহাম্মদ হোসেন ওরফে লাল পুইজার ছেলে। তিনি মিয়ানমার মংডু মেরুল্লা গ্রাম থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আলম নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের আনসার ক্যাম্পে লুট ও কমান্ডার হত্যার মূল পরিকল্পকারী। ঘটনাস্থল থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ১৩ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
র্যাব-১৫ টেকনাফ ক্যাম্পের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহতাব জানান, শুক্রবার ভোরে টেকনাফ র্যাবের একটি টহল দল দমদমিয়া এলাকায় একদল ডাকাতের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে পড়ে। এ সময় ডাকাতেরা অতর্কিতভাবে র্যাবের ওপর গুলি ছুড়তে শুরু করে। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। আধাঘন্টা ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। পরে তার পরিচয় জানা যায়।
তিনি আরও জানান, নুরুল আলম দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
টেকনাফের কাটাবুনিয়া: নিহত বেল্লাল হোসেন লক্ষীপুরের শাকচর জিএমহাট গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলেন বলে দাবি বিজিবির। এর আগে টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে যাওয়ার পথে মরিচ্যা চেকপোস্টে তাকে আটক করেন কক্সবাজারের ৩৪ বিজিবির সদস্যরা।
টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ-জামান চৌধুরী বলেন, শুক্রবার ভোরে টেকনাফের সাবরাংয়ের কাটাবুনিয়া এলাকায় দিয়ে মিয়ারমার থেকে আসা ইয়াবার চালান প্রবেশ করছে- বেল্লালের দেওয়া এমন খবরে তাকে নিয়ে সেখানে অভিযান যায় কক্সবাজার ৩৪ ও টেকনাফ ২ বিজিবির সদস্যরা। এ সময় ইয়াবা পাচারকারী দলের সদস্যরা বিজিবি সদস্যদের ওপর গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। পরে পাচারকারীরা পিছু হটলে বেল্লাল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নেওয়া পথে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে ৯ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় সোর্পদ করা হয়েছে।
Leave a Reply