(১) দ্বাদশভাবে রবি- জাতকের প্রকৃতি হবে সাধু-সন্ন্যাসীর মতো। এরা একাকী থাকতে ভালবাসে। অনেক সময় পিতার অনুপস্থিতিতে বড় হয়। আধ্যাত্মিক জীবন যাপনের জন্য পারিবারিক সাহায্য পায় না। কর্তৃত্বপ্রধান মানসিকতার মা হয়ে থাকে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতের অমিল থাকে। নিজের সম্বন্ধে উঁচু ধারণা থাকে না।

(২) দ্বাদশভাবে চন্দ্র- অবহেলিত ভাবে শিশুকালে প্রতিপালিত হওয়া বোঝায়। শিশুকালে মা যেন এদের থেকেও থাকে না। বিদেশে সাফল্য, অন্যান্য আত্মীয়ের দ্বারা প্রতিপালিত হওয়া বোঝায়। মা আধ্যাত্মিক মনোভাবের হয়। জল সম্পর্কিত জিনিসের সাহায্যে তাড়াতাড়ি আরোগ্যলাভ বোঝায়। শয্যা সুখে আনন্দ পায়। মানসিক শান্তির জন্য ধ্যানে আগ্রহী।

(৩) দ্বাদশভাবে বুধ- সব সময় পত্রপত্রিকা কেনা ও পড়ার আগ্রহ বোঝায়। ভাল রকম লেখার দক্ষতা বোঝায়। এরা সাইকিক প্রকৃতির হয়ে থাকে। বাকশক্তির দুর্বলতা, অনেক সময় কথা বলার সময় তোতলামো থাকে। যারা মেধাবী তারা লোকচক্ষুর আড়ালে নানাধরনের গবেষণায় মানুষকে তাক লাগিয়ে দেয়। কারও আবার কবি প্রতিভা থাকে।

(৪) দ্বাদশভাবে শুক্র- শয্যা সুখের জন্য যা প্রয়োজন সব পেয়ে থাকে। সব সময় ভয় কাজ করে, এই বুঝি প্রেমটা ভেঙে যাবে বা বিয়ে করলে সঙ্গী ছেড়ে চলে যাবে। অল্প বয়সে বিবাহ হলে দাম্পত্যসুখে বিশেষ বাধা বা বিচ্ছেদ। গুপ্তধন বা অন্যের সম্পত্তি পাওয়া বোঝায়। প্রেমে রহস্যময়তা, দীর্ঘজীবন, শান্তিতে মৃত্যু ও সব সময় অন্যের কাছ থেকে কিছু পাওয়া বোঝায়।

(৫) দ্বাদশভাবে মঙ্গল- মাঙ্গলিক দোষযুক্ত। অল্প বয়সে বিয়ে হলেই ডিভোর্স হবে বা স্ত্রী পালিয়ে যাবে। আগ বাড়িয়ে চলার অভ্যাস থাকে। সব ব্যাপারে কেমন যেন হঠকারী হয়।

(৬) দ্বাদশে বৃহস্পতি- শ্রীগুরুলাভ, ধ্যানযোগে সিদ্ধিলাভের চেষ্টা, আধ্যাত্মিক বা দিব্যজীবনের প্রতি প্রবল আগ্রহ, আশ্রমে থাকার ইচ্ছা বা আশ্রমিক হতে চাওয়া। অনেকের গুরু ছাড়াই ধর্মীয় জীবনযাপন করা বোঝায়। পিতামাতার ধর্মীয় জীবনকে সংকীর্ণ দৃষ্টিতে দেখে বা কুলগুরুকে ত্যাগ করে নিজের মতো উচ্চতর আধ্যাত্মিক জীবনে অংশ গ্রহণ বোঝায় ও শান্তিতে মৃত্যু ও স্বর্গলাভ বোঝায়।

(৭) দ্বাদশে শনি- চোখে বা পায়ে কোনও না কোনও সমস্যা থাকা বোঝায়। পুরুষের ক্ষেত্রে যৌবনে যৌন অক্ষমতা, আর নারী হলে যৌন শিথিলতা। খুব অল্প বয়স থেকে ধর্মীয় আদর্শে চলার চেষ্টা বা যৌগিক শৃঙ্খলায় থেকে বড় হওয়া বোঝায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিতার সেরকম সাহায্য না পেয়ে বড় হওয়া বোঝায়। শনি কর্মিক প্ল্যানেট। তাই কোনও না কোনও ঋণ শোধ করা বোঝায়। শাস্ত্রে পাঁচ ধরনের ঋণের উল্লেখ আছে। তার কোনও একটি বা দু’টির শোধ এই জীবনেই করতে হবে এই রকম বোঝায়। নিজের থেকে বড় বা বয়স্ক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক বোঝায় (জাতকের ক্ষেত্রে)। কোনও সেবা প্রতিষ্ঠানে যোগদান বোঝায়, আবার সেখান চলে আসা বোঝায়। কমবেশি সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা বোঝায়।

(৮) দ্বাদশে রাহু- অস্থির চেতনা, বয়সকালে ঘুমের অস্থিরতা বা ঘুম না হওয়ার জন্য টেনশান, প্রবল কামতাড়িত থাকা বোঝায়। যে কোনও ধর্মীয় জীবনে দীক্ষা নেওয়া তার জীবনদর্শন অনুসরণ করা বোঝায়। উগ্র কোনও সাধনা করা বোঝায়। রোগ হলে ঠিকমত চিহ্নিত না হওয়া বোঝায় ও ডাক্তারের ভুল চিকিত্সায় ক্ষতি হওয়া বোঝায়।

(৯) দ্বাদশে কেতু- দ্বাদশে ও লগ্নে কেতুর অবস্থানে জাতক/জাতিকারা হঠযোগ সে ভাবে পছন্দ করে না। এরা সব সময় ধ্যান ও যোগের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ধ্যানযোগে সিদ্ধিলাভ বোঝায়। অনেকে মোক্ষ বা নির্বাণ লাভের দরজায় উপস্থিত হয়। দূর ভ্রমণে আনন্দ। অনেক দূরে ভ্রমণ হয়ে থাকে। আশ্রমে থাকার ডাক আসে। এরা কোনও না কোনও আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে বা বড় কোন ধর্মীয় সংস্থার সঙ্গে কম বেশি যুক্ত থাকবেই। অল্প বয়স থেকেই এরা শান্তি খোঁজার চেষ্টা করে।