নোয়াখালীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক তরুণীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার পূর্বশুলুকিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম পারভিন আক্তার (১৮), তিনি ওই গ্রামের জহিরুল হকের মেয়ে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের পরিবার জানায়, ঘটনার সময় পারভীনের বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। রাত ৮টার দিকে একটি ফোনকল পেয়ে বাড়ির বাইরে যান পারভীন। তার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বাড়ির অন্য সদস্যরা খোঁজাখুঁজি একপর্যায়ে পাশের একটি ধানক্ষেতে তার রক্তাক্ত লাশ পান।

খবর পেয়ে নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরিফ ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান জনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে পুলিশ।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গার্মেন্টস কারাখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিন মাস আগে বাড়িতে ফিরে আসে পারভীন। বাড়িতে আসার পর থেকে এলাকার কিছু যুবক তাকে উত্ত্যক্ত করত। পারভীনের মা কয়েকদিন ধরে বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে একই এলাকার যুবক সাদ্দাম প্রায়ই ওই বাড়িতে যেত। সে পারভীনের ঘরে ঢুকে কথা বলত। এর মধ্যে সে কয়েকবার পারভীনকে ধর্ষণও করেছে।

ওই ঘটনার জেরেই তাকে হত্যা করা হতে পারে। ঘটনার পর থেকে সাদ্দামকে এলাকায় দেখা যায়নি বলেও দাবি করেন তারা।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. স্বপন দাস জানান, নিহত পারভীনের শরীরে অনেকগুলো জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তারা।

নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান জনি জানান , ঘাতকরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই নারীর ঘাড়, হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলেছে। এ ছাড়া তার নিম্নাঙ্গসহ পুরো শরীরে ২০টি কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, ঘাতকরা কোনো কারণে তার ওপর খুবই ক্ষিপ্ত ছিল।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই গ্রাম থেকে শাহেদ নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

নিহতের বাবা বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। দোষীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।