চলতি বছরের শুরুতে গুগলে ‘ইডিয়ট’ লেখে সার্চ দিয়ে ছবি অনুসন্ধান করলেই চলে আসতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি। এরপর এটি বন্ধ ছিল। কিন্তু বছরের শেষের দিকে গুগলে ‌‘ইডিয়ট’ লিখলে দেখাচ্ছে ট্রাম্পের ছবি।

এছাড়া রিপাবলিকান পার্টি লিখে সার্চ দিলেই ‘টপ স্টোরিজ’-এ প্রথম শিরোনামে দেখায় রিপাবলিকান পার্টির কাজ হচ্ছে মিলিয়নিয়ার আর বিলিয়ননিয়ারদের রক্ষা করা।

মার্কিন প্রতিনিধিসভার হাউজ কমিটিতে হাজির হয়ে বুধবার এ সব নিয়েই রিপাবলিকানদের কড়া কড়া অভিযোগ ও প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন গুগল সিইও সুন্দর পিচাই।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক কোনও দলের প্রতি পক্ষপাত নেই তাদের সংস্থার। যে কারণে গুগল নিয়ে খুঁজলে গুগ‌ল সম্পর্কেই অনেক নেতিবাচক পাতা উঠে আসে।

সুন্দরের ব্যখ্যা, গুগলে খোঁজার কাজটা হয় পুরোপুরি যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। এবং সেই ব্যবস্থা বেশ মজবুত। কোনও ব্যক্তি বিশেষের পক্ষে এই প্রক্রিয়াতে হেরফের ঘটানোর সুযোগ নেই। কোনও বিশেষ সময়ে কোনও শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দিয়ে কতবার খোঁজা হচ্ছে, ওই বিষয়গুলি কত ওয়েব পাতায় আছে, গুগলেল বাইরের সংস্থাগুলির কাছে সেগুলির রেটিং-এমন অনেকগুলো বিষয় বিচার করে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন কতগুলো ওয়েব পাতা দেখায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনুসন্ধানের ফলও তাই পাল্টাতে থাকে। কোনও বিষয় নতুন করে চর্চায় উঠে এলে, পুরনো সেই প্রসঙ্গের পাতাগুলি ভেসে ওঠে।

ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টি নিয়ে বছরের শুরুতে গুগল যে নেতিবাচক ফলগুলো দেখাচ্ছিল, এখন আবার তা সামনে আসছে— সেগুলো নিয়ে চর্চা হচ্ছে বলেই। এখন হয়তো আসছে একটু অন্য ভাবে। কেন ‘ইডিয়ট’ লিখলে ট্রাম্পের ছবি মেলে— এই সংক্রান্ত পাতাগুলো বেশি ভেসে উঠছে। এটাকে ‘গুগল বম্বিং’ বলে থাকেন অনেকে। অর্থাৎ প্রশ্ন করে চর্চায় তুলে এনে রিপাবলিকান পার্টি নিজেরই পুরনো অস্বস্তি চাগিয়ে তুলছে।

ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নন, এর আগে জর্জ ডব্লিউ বুশেরও অস্বস্তি বাড়িয়েছিল গুগল। ‘মিজ়ারেবল ফেলিয়োর’ লিখলেই তার ছবি দেখাত। অনেকে তাই মনে করেন, এ সব থেকে বাঁচার উপায় একটাই। কারও সম্পর্কে খারাপ কিছু দেখলে প্রশ্ন করো না। নয়তো সেগুলি ফের মাথা তুলবে সার্চ ইঞ্জিনে। রিপাবলিকান পার্টির নেতারা ঠিক উল্টোটাই করেছেন। ফল পাচ্ছেন হাতেনাতে।

গুগল প্লাসের ৫ কোটি ২৫ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্যফাঁসের কথাও বুধবার স্বীকার করেছেন পিচাই। ডেমোক্র্যাট সদস্যদের প্রশ্ন ছিল, গুগল অ্যাকাউন্টের তথ্য যে সুরক্ষিত থাকছে, তার নিশ্চয়তা কী? এ বিষয়ে আশ্বস্ত করতে সুন্দর মনে করিয়ে দেন, গুগল আমেরিকারই সংস্থা। অন্যান্য সংস্থার মতো আমেরিকার কেন্দ্রীয় আইন মেনে চলে। তা ছাড়া, গ্রাহক নিজেই গোপনীয়তা ও সুরক্ষার সেটিং অদল-বদল করে নিতে পারেন পছন্দ মতো। সেই ব্যবস্থাটি কতটা সরল করা যায়, গুগল সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার।