বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চীন ১০ বিলিয়ন মর্কিন ডলার ব্যয় করবে বলে খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খ।

শনিবার পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করবে চীন। উদ্দেশ্য একটাই, বাংলাদেশের আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্টকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা। যার চালিকা শক্তি হল খালেদার দল বিএনপি। শুধু তাই নয়, তাদের সঙ্গে রয়েছে মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি ও জামায়াতের মূল বৈশিষ্ট্য এরা উভয়ই পাকিস্তান ও চিনপন্থী। অতএব নিজেদের স্বার্থেই চীন বাংলাদেশের এই বিরোধী ঐক্যফ্রন্টকে ক্ষমতায় ফেরাতে আদাজল খেয়ে নেমেছে।

যুগশঙ্খ লিখেছে, ঢাকার প্রশাসন সূত্রে খবর, দীর্ঘ দশ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে যেনতেন প্রকারে গতিচ্যুত করে খালেদার জোটকে মসনদে বসাতে তৎপর চীন। আর এ জন্যই তারা এ অর্থব্যয়ে প্রস্তুত। প্রশ্ন উঠেঠছে, কেন হাসিনা সরকারের প্রতি এমন বিরাগভাজন হল চীন?

দেখা গিয়েছে, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্প থেকে চীনকে বাদ দেয় হাসিনা সরকার। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বঙ্গোপসাগরে একটি প্রকল্প। হাসিনা সরকারের উপর বেইজিংয়ের আক্রোশের পেছনে এটিই বড় কারণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যার ফলে হাসিনা সরকার কে গদিচ্যুত করতে চীনের ১০ বিলিয়ন অর্থব্যয়। একইসঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যও বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে চীন।

প্রশ্ন উঠেছে, অতীতে পদ্মপারের এই দেশের নির্বাচনে যেখানে বিন্দুমাত্র নাক গলায়নি বেইজিং, সেখানে এবার এই সক্রিয়তা কেন? কেন বাংলাদেশের ভোট নিয়ে এত উদ্বিগ্ন চীন?

প্রতিবেদনে পত্রিকাটি লিখেছে, সূত্রের খবর, এনিয়ে ঢাকার চীনা দূতাবাস তিন বার বিবৃতি দিয়েছে। পাশাপাশি বিরোধীদের সঙ্গে একাধিকবার গোপন বৈঠকও করেছে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে ঢাকার চীনা দূতাবাসের কয়েকজন আধিকারিক গোপন বৈঠকও করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই এই আর্থিক সাহায্য দানের কথা বলা হয়। অন্য একটি সূত্র মতে, চীন দশ বিলিয়ন নয়, তারও বেশি অর্থ ব্যয়ে রাজি।

পরিসংখ্যান বলছে, চীন বাংলাদেশে রপ্তানি করে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। সবমিলিয়ে বাংলাদেশকে তারা বছরে একশো কোটি ডলারের অর্থসাহায্য দেয়। তবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২৪ বিলিয়ন বা দুই হাজার চারশো কোটি ডলারের সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষনা করেন।

বাংলাদেশের পরিকাঠামোগত প্রকল্পে ৩১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে চীন। যা পাকিস্তানের পরই দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এর মধ্যে রয়েছে, সড়ক,রেল,কয়লা ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পানি পরিশোধনগার নির্মাণ। বাংলাদেশে বর্তমানে চীনা বিনিয়োগ সরকারি এবং বেসরকারি খাতে মোট ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এছাড়া কৌশলগত অংশীদার হিসাবে চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের যৌথ কনসর্টিয়ামের কাছে বাংলাদেশের প্রধান পুঁিজবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।