চট্টগ্রামে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ও হানিফ সুপার নামে দুইটি পরিবহন সার্ভিসের বাস কাউন্টারে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

শনিবার দুপুর ও বিকেলে নগরের খুলশী থানার দামপাড়া গরীবুল্লাহ শাহ মাজার গেইট ও বাকলিয়া থানার কর্ণফুলী সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে ভাংচুরও চালানো হয়।

এ ঘটনার জেরে দুইটি পরিবহন সার্ভিসের পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবকটি রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরিবহন-মালিক শ্রমিকরা ঘটনার পর রাতে তাৎক্ষণিক জরুরি বৈঠকে বসেছেন। হঠাৎ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব রুটের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের চেয়ার কোচ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এবং হানিফ সুপার শুধুমাত্র চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করে। দুইটি পরিবহনের মালিকানাও ভিন্ন।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হানিফ। অন্যদিকে হানিফ সুপারের মালিক হচ্ছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. কামাল উদ্দিন। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হানিফ এন্টারপ্রাইজের পাশাপাশি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রুটে চলাচল করা হানিফ সুপারের কাউন্টারেও তালা লাগিয়ে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভাঙচুরের সাথে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওই হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত এবং ছাত্রলীগ নেতা জনি হত্যা মামলার আসামি আবু সাদাত মো. সায়েমের নেতৃত্বে। এটার সাথে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। পরে আবু সাদাত মো. সায়েমের বক্তব্য জানার জন্য বেশ কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে কল দিয়েও কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে সেই ভাঙচুরে অংশ নেয়া যুবকরা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্তদের একজন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রে অংশ নেন, যেটা আদালত স্বীকৃত। তার মালিকানাধীন হানিফ পরিবহনের কোনো বাস চট্টগ্রামের মাটিতে চলতে দেয়া হবে না। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ এখন থেকে তা প্রতিহত করবে। তবে তিনি লুটপাটের কথা অস্বীকার করেন।
কাউন্টারের কর্মীদের অভিযোগ- কাউন্টারে হামলা ও লুটপাট করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর সিএমপির খুলশী থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। ততক্ষণে ভাঙচুর করে সবকিছু লুট করে নেয় তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিএমপির খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ভাঙচুরের সময় ওই কাউন্টারে অবস্থান করা একাধিক যাত্রী বলেন, হঠাৎ বেশকিছু পোলাপান এসেই কাউন্টার থেকে বের হয়ে যেতে বলে। আমরা কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের বলে বেরিয়ে যান, নয় তো আপনাদের উপরও হামলা হবে। আমাদেরকে বের করে দিয়েই তারা প্রথমে বাইরে থেকে জয়বাংলা বলে স্লোগান দিয়ে পাথর ছোড়া শুরু করে। পরে কাউন্টারের ভেতর ঢুকেও ভাঙচুর করতে দেখা গেছে।