অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ অক্টোবর ৩, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 618 বার
ঝিনাইদহে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতেই তিন্নির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।পরিবারের অভিযোগ, বড় বোনের সাবেক স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে লজ্জায় আত্মহত্যা করেছে সে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত দুলাভাই জামিরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
তিন্নির খালাতো ভাই মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। তার বড়বোন মিন্নির সঙ্গে একই গ্রামের পুনুরুদ্দিনের ছেলে জামিরুলের বিয়ে হয়। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় জামিরুলের সঙ্গে মিন্নির বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবার মিন্নিকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে জামিরুল। এ জন্য জামিরুল নানাভাবে তিন্নির পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।
এরই জেরে গতকাল সন্ধ্যায় তিন্নিদের বাড়িতে এসে জামিরুল বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ভাঙচুর চালায়। পরে রাত ১০টার দিকে জামিরুল আরও ১৫-২০ জন লোক নিয়ে তিন্নিদের বাড়িতে হামলা করে। তিন্নি বাড়ির দুই তলায় নিজের ঘরে পড়ছিলেন। এ সময় জামিরুল লোকজন নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে তিন্নিকে চরম মারধর করেন।
একপর্যায়ে জামিরুল তার লোকজন নিয়ে চলে যান। এর ১০ মিনিট পরেই তিন্নির মা ও বোন বাড়ির দুই তলায় গিয়ে তিন্নির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।
তিন্নির মা হালিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে আমার বাড়িতে কোনো ছেলে মানুষ নেই। তিন্নি অনেক মেধাবী ছিল। সে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু জামিরুল লোকজন এনে আমার মেয়েকে আজ মেরে রেখে গেল। আমি কার কাছে বিচার দেব? কে বিচার করবে?’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওরা আমার মেয়েকে এমন কিছু করে মেরেছে যেন কেউ আসল ঘটনা বুঝতে না পারে। ওরা তিন্নিকে মেরে ফেলেছে।’
তিন্নির বোন ও পরিবারের অন্যদের অভিযোগ, পাশবিক নির্যাতন করার কারণেই হয়তো তিন্নি আত্মহত্যা করেছেন। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রুমন রহমান লাশের ময়নাতদন্ত করেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা–নিরীক্ষা পর জানা যাবে আরও কোনো ঘটনা আছে কি না।’ ওই প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
এ বিষয়ে শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তিন্নির মৃত্যুটি রহস্যজনক। হয়তো হামলাকারীরা তার সঙ্গে এমন কিছু করেছে, যে কারণে তিনি আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।’
Leave a Reply