জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 875 বার
দেশব্যাপী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য সরকারে সরবরাহকৃত পিপিই এবং মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া স্বাস্থ্য সচিবের বক্তব্যকে “মিথ্যাচার” হিসাবে অবিহিত করে ফেসবুকে সমালোচনামূলক পোস্ট দেওয়ায় নোয়াখালীতে আবু তাহের নামের একজন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। ডা. আবু তাহের নোয়াাখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এ্যানেসথেসিওলজিস্ট। এনিয়ে কোনো তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না এই মর্মে কারণ দর্শানের জন্য শনিবার সকালে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে চিঠি দেন ডা. তাহেরকে।
কি লিখা ছিলো ডা. তাহেরের সেই পোস্টে
“ আমি নোয়াখালী ২৫০শয্যা সদর হাসপাতালে কর্মরত একজন এ্যানেসথেসিওলজিস্ট।
রোগীর সবচেয়ে কাছ থেকে আমি চিকিৎসা দেই। গত ১ মাসে প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমিসহ আমার ডিপার্টমেন্ট এর কেউ ১টিও হ৯৫/শহ৯৫/ভভঢ়২ মাস্ক পাইনি। তাহলে স্বাস্হ্য সচিব মিথ্যাচার কেন করলেন উনি হ৯৫ ইকোয়িভেলেন্ট মাস্ক দিচ্ছেন? তাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা বলতেছে? এই মিথ্যাচার এর শাস্তি কি হবে?
গত ১ মাসে আমার ডিপার্টমেন্ট এ ৮জনের জন্য ২টি পিপিই দেওয়া হয়েছে। এই হলো পর্যাপ্ত পিপিই মজুদ। ওহ কি বলবেন আমরা কাজ করিনা? গত ১মাসে ১৫০এর মত অপারেশন আমি একাই করেছি বাকিদের হিসাব দিলাম না। আপনাদের ওসব পিপিই মাস্ক না পেয়েছে আমরা বসে নাই বসে থাকবোও না কিন্তু জাতির সামনে মিথ্যাচার কেনো করবেন।। আমি নিজের বেতন এর টাকয় কিনা সার্জিকাল মাস্ক পরে প্রতিদিন অপারেশন করি। পিপিই নিজের টাকায় কিনা আছে ,অন্যরা না পরলে একা পরে কি হবে তাই পরি না।
৩মাস কি প্রস্তুতি নিয়েছেন ? এখন বলেন এগুলো পাওয়া যাচ্ছে না? আমাদের অনেকে আজ আপনাদের এসব মিথ্যাচার এর কারনে আক্রান্ত। @ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এরকম অনেক মিথ্যা প্রস্ততির নাটক সাজিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে কিছু লুটেরারা দল।”
গত ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ডা. আবু তাহের তাঁর ফেসবুক পেসে যেই স্ট্যাটাস দেন ১৮ এপ্রিল শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এটি শেয়ার হয় ৬১৫বার এবং ২২১জন মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে শুধু নোয়াখালী নয় গোটা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
নোটিশের প্রথমে ডা. মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের জন্য পিপিইসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রাপ্তি, সরবরাহ এবং সম্ভাব্য ক্রয়ের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। পররবর্তী উল্লেখ করা হয়- পিপিইসহ যাবর্তী সুরক্ষা সামগ্রী ব্যাবহারের নির্দেশনা এবং হাসপাতাল স্টোরে উল্লেখিত সামগ্রী সুস্পস্ট ধারণা থাকা স্বত্তেও এমন মন্তব্য করায় অসন্তোষ ও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় যা সরকারি কর্মচারীর আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি এবং অসদাচরণ হিসাবে গণ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন আচরণের জন্য কেনো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে না তা এই পত্র জারির তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এদিকে শোকজের চিঠি প্রাপ্তির পর চিঠি সংযুক্ত করে আরো একটি পোস্ট দেন ডা. আবু তাহের। সেখানে তাঁকে আরো বেশী প্রত্যয় মনে হয়। সেই পোস্টে তিনি উল্ল্রেক করেন- “সত্য কথা বলার শাস্তি। ১টাও মিথ্যা বলছি প্রমাণ করতে পারলে শাস্তি মেনে নিব। এই যুদ্ধে সামনে থেকে ছিলাম , আছি , থাকবো”
এবিষয়ে একাধিকবার ফোন করে নোয়াখালি ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো.ফরিদ উদ্দিন চৌধুরির মতামত জানতে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
এবিষয়ে ডাা. আবু তাহের জানান, তিনি যা বলেছেন তা শতভাগ সত্য। যদি কোন কিছু মিথ্যাপ্রমাণ হয় তাহলে তিনি যে কোন ধরনের শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত আছেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং এ সময়ের মধ্যেই জবাব দিবেন।
নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
Leave a Reply