ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট ও দুই সহোদরাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মো. আলমগীর খাঁ (২৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১১। গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ‘ভুয়া সেনাসদস্য’ আলমগীরকে আটক করে র‍্যাব। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানাধীন কাটা কুশিয়া এলাকায়, পিতার নাম এলাহি নেওয়াজ খাঁ।

আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. আলমগীর হোসেন ২০১২ সালে ঢাকা সেনানিবাসস্থ রহনীগন্ধার (কচুক্ষেত) আর্মি স্টোরে চাকরি নেয়। সেখানে চাকরির সময় সে সেনাবাহিনীর ভুয়া আইডি কার্ড ও ট্রাউজার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করত। এরই ধারাবাহিকতায় সে সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে ভিকটিমদের সাথে ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

র‍্যাব সূত্র জানায়, এর পর সে গত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ভিকটিমদের বাড়িতে কৌশলে অবস্থান করে। ভিকটিমের বাড়িতে অবস্থানকালীন ভাই-বোনের সম্পর্কে সুবাদে ভিকটিমের বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। সে ওই দিন রাত ১২টার সময় কৌশলে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। সেই সাথে এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভিকটিমকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।

পরবর্তীতে আসামি আলমগীর বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমদের ভয়-ভীতি ও হুমকি দেয় এবং বলে তার কথামতো তার সাথে ঘুরতে না গেলে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেবে। আলমগীর গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ভিকটিম দুই বোনকে বিভিন্ন কৌশলে ফুঁসলিয়া ও অভিনব কায়দায় ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণপূর্বক ব্ল্যাকমেইল করে তাদেরকে ঢাকা হতে বরিশালগামী কীর্তনখোলা লঞ্চের কেবিনে উঠিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আসামি আলমগীর লঞ্চের কেবিনের ভেতর পর্যায়ক্রমে ভিকটিম দুই বোনকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তাদের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে ও জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ভিকটিমদের মারধর ও হত্যার চেষ্টা করে। এ ছাড়াও সে উভয় ভিকটিমের সাথে জোরপূর্বক আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। পরদিন ভোরে ভিকটিমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ভিকটিমদের তাদের নিজ বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব ১১ গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পায় এবং একটি বিশেষ আভিযানিক দল গত গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। উৎস -কালের কন্ঠ