রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচরে পাহাড় ধসে ১১ জন নিহত হয়েছেন।আজ মঙ্গলবার সকালে প্রবল বর্ষণে নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়ীঘাট, ধরমপাশা, আমতলী, বড়পুল ও ছড়াইপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেণ বড়পুল পাড়া এলাকায় একই পরিবারের সুরেন্দ্র লাল চাকমা (৪৮), রাজ্য দেবী চাকমা (৪৫) সোনালী চাকমা (০৯), রুমেল চাকমা (১২), ফুল দেবী চাকমা, ইতি চাকমা, রীতা চাকমা ও রিটেন চাকমা।
নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা জানান, রাতে ভারি বৃষ্টিতে পাহাড় ভেঙ্গে মাটিচাপা পড়ে বুড়িঘাট ইউনিয়নে ছয়জন ও নানিয়ারচর ইউনিয়নে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া টানা বর্ষণে নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুরে ৪৫টি, বগাছড়িতে ৪২ ও বুড়িঘাটে একটি স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। এসব এলাকায় মানুষের বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড় ঘেষে বসবাসরত মানুষদের মাকিং করে নিরাপদ স্থানে সড়ে যেতে বলা হচ্ছে। টান বর্ষণে পাহাড় ধসের আতঙ্কে ঘর ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, ‘নানিয়ার চরে তিনটি জায়গায় পাহাড় ধস হয়েছে। জেলা সদরসহ সব মিলিয়ে বিশটির মতো পাহাড় ধস হয়েছে গত রাত থেকে। জেলায় গত কয়েকদিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছিলো। এখনো একটানা বৃষ্টি হয়েই যাচ্ছে। বৃষ্টির যে অবস্থা, এভাবে যদি বৃষ্টি হতে থাকে তাতে আমরা আরো পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছি।
গত ৪দিনের টানা বর্ষণে তছনছ হয়ে গেছে রাঙামাটি শহর। পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর। ধসে পড়েছে পিলার, বাড়ি-ঘরের প্লাস্টার ও সীমানা প্রাচীর। সড়কে সড়েকে জমেছে মাটির স্তুপ। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। রাত থেকে দিনে অর্ধেক সময় বিদ্যুৎবিহীন ছিল রাঙামাটি। এছাড়া শহরের রাঙামাটি চেম্বার অব কর্মাস ভবনের পার্শ্ববর্তী সড়ক, সিনিয়র মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী দেয়াল ও চম্পকনগর এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা অফিসের দেয়াল, টিটিসি, বিজিবি রোড, ডিয়ার পার্ক, ঘাগড়া, সাপছড়ি, রাঙাপানি, পুলিশ লাইন ধসের ঘটনা ঘটেছে।

পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।