অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 879 বার
ভারতের বিতর্কিত নাগরিক আইনের প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ করেছেন ডাকসুর সহ-সভাপতি নুরুল হক নূর। বর্হিবিশ্বের বিষয়ে আন্দোলনের এখতিয়ার নূরের নেই দাবি করে সমাবেশে হামলা চালিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশ। এ সময় নূরের অনুসারীরাও পাল্টা আঘাত করেন।
পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্য বাসভবনের সামনে আরেক দফায় নূরের অনুসারীদের মারধর করেন মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হয়েছে বলে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রথম দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা উপেক্ষা করে সমাবেশ চালিয়ে যান নূর ও তার সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সমাবেশ থেকে হামলা ও ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ বুধবার বেলা ১২টায় সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সংগঠনটি।
আহতরা হলেন- ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কর্মী আকরাম হুসাইন, নাহিদ ইসলাম, সালেহ উদ্দিন সিফাত, আমিনুল ইসলাম। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সহ-সভাপতি নিয়ামুল হাসান চৌধুরী, সদস্য হুমায়ুন আহমেদ, কর্মী জিহাদ বিশ্বাস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদদীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াদুল ইসলাম আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ভারতের বিতর্কিত ও সাম্প্রদায়িক বিভেদের নাগরিক আইন এনআরসি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ভারতীয়দের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশের ডাক দেন ভিপি নূর। তবে সমাবেশ শুরুর আগেই রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুনসহ নেতাকর্মীরা।
পরে পৌনে ৪টার দিকে ভিপি নূরসহ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা সমাবেশ করতে গেলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মঞ্চের সভাপতি বুলবুল মারধর শুরু করেন। এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরাও পাল্টা আঘাত করেন। এতে উভয়পক্ষের ১১ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
আহতদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পরিষদের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে যান। সেখানে অনুমতির জন্য অপেক্ষা করার সময়ে মঞ্চের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দফায় মারধর করে।
হামলার বিষয়ে সমাবেশে নুরুল হক নূর বলেন, ভারতীয়দের পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে পাঠানোর চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ বিতর্কিত এই এনআরসির বিরুদ্ধের প্রতিবাদ করতে মিলিত হয়েছি। কিন্তু এসময় ভারতের দালাল বিজেপির এজেন্ট সন্ত্রাসী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আমাদের ওপর হামলা করেছে। তারা বাংলাদেশকে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আন্দোলন করার এখতিয়ার নূরের নেই। ডাকসুর ভোটার হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসা করেছি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা না বলে কেন অন্য দেশের ইস্যু নিয়ে কথা বলছে। তখন তারা আমাদের ওপর হামলা করে। পরে আমরা প্রতিহত করেছি।’
দ্বিতীয় দফায় হামলার বিষয়ে আল মামুন বলেন, বিকালে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মঞ্চের সভাপতি বুলবুলকে নূরের অনুসারী সিফাত নামে একটি ছেলে চাকু দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। পরবর্তীতে উপাচার্যের বাসার সামনে দেখা হলে তাদেরকে আমরা হত্যাচেষ্টার কারণ জানতে চেয়েছি। পরে তারা দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। এখন এটাকে তারা মারধর বলে চালাতে চেষ্টা করছে।’উৎস -কালেরকন্ঠ
Leave a Reply