জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ ডিসেম্বর ৮, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 861 বার
বরিশালের বানারীপাড়ায় একই বাড়িতে ৩জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃকতরা ওই তিন হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ ও র্যাব। এ সময় ১টি ছুরি এবং ওই বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া স্বর্ণালংকার ও ৩টি মুঠোফোন উদ্ধার করেন তারা। আটককৃতরা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেও তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।
গত শনিবার সকালে বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর গ্রামে কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের বাড়ি থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওইদিন দুপুরে সলিয়াবাকপুর এলাকা থেকে জাকির হোসেন নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। জাকির এক সময় ওই বাড়ির নির্মান শ্রমিক ছিলো এবং সে নিজেকে জ্বীনের বাদশা বলে পরিচয় দিত। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত শনিবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে জুয়েল হাওলাদার নামে আরেকজনকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আটক করে র্যাব-৮। ওই রাতেই নগরীর সাগরদী এলাকায় জাকিরের ভাড়া বাসা থেকে ১টি ছুরি, ৩টি মুঠোফোন সেট এবং বেশকিছু স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব-৮’র ১ নম্বর কোম্পানী কমান্ডার মেজর খান সজিবুল ইসলাম জানান, প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়িতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজের সুবাদে প্রবাসীর বাড়িতে যাতায়াত ছিল জাকিরের। তার স্ত্রী মিশুর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তার। সম্পর্কের বিষটি জেনে ফেলে প্রবাসীর খালাতো ভাই ইউসুফ। এ কারণে তারা ইউসুফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত শুক্রবার রাতে জাকির লোভের বসে জুয়েলকে নিয়ে ওই বাড়ি যাওয়ার কথা স্বীকার করে সে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, আটককৃত দুই জন জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এবং গুরুত্বপুর্ণ তথ্য দিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত জানাতে রাজী হননি তিনি। অপরদিকে প্রবাসীর স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশু ও তার ভাতিজি আছিয়া আক্তারকেও নজরদারিতে রাখার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর এলাকার কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রব হাওলাদারের বাড়িতে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতের পর যেকোনো সময় তিনজনকে হত্যা করা হয়। কথিত জ্বীনের বাদশা জাকিরের সাথে প্রবাসীর স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশুর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলায় ওই রাতে প্রথমে ইউসুফকে পুকুর ঘাটে নিয়ে পা বেঁধে হত্যা করে জাকির, জুয়েল ও মিশু। এই হত্যাকাণ্ড দেখে ফেললে মিশুর শ্বাশুড়ি মরিয়মকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তারা। মরিয়মকে হত্যার বিষয়টি দেখে ফেললে হত্যা করা হয় শফিকুল আলমকে।
আব্দুর রব ১১ বছর ধরে কুয়েতে একটি মসজিদে ইমামতি করেন। তার স্ত্রী ও সন্তান বাড়িতে থাকেন। নিহত তিনজনের মধ্যে ইউসুফ এবং শফিকুল আলম দুই দিন আগে ওই বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
নিহত তিন জনের মরদেহের ময়না তদন্ত শনিবার সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রবিবার তাদের মরহেদ বানারীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় শনিবার রাতে প্রবাসী রবের ভাই সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কুমার পাল।
Leave a Reply