সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শান্তি কমিটির এক সদস্যের ছেলে স্বাধীনতার ৩৪ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। তিনি বর্তমানে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদের দায়িত্বে রয়েছেন। তার নাম বজলুর রশিদ। বাড়ি উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে। জন্ম ১৯৫৫ সালের ১০ই অক্টোবর। তার পিতা জয়নাল আবেদিন ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জালালপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।

সদ্য বিলুপ্ত শাহজাদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা বিনয় কুমার পাল মঙ্গলবার এ প্রতিবেদককে জানান, আমার জানা মতে বজলুর রশিদ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। তার বাবা মুসলিম লীগ করতেন।
এটাই সত্য। আমরা বজলুর রশিদকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। একই সংগঠনের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান জানান, বজলুর রশিদের বাবা জয়নাল আবেদিন শান্তি কমিটির সদস্য থাকলেও ওই সময় তিনি এলাকার কোন ক্ষতি করেননি।

এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী জানান, বজলুর রশিদ প্রকৃতপক্ষে ভারত থেকে ট্রেনিং করেনি। যেভাবেই হোক তার নাম মুক্তিযোদ্ধা গ্রেজেটে ওঠেছে। ভাতাও পাচ্ছে। তার মতো মুক্তিযোদ্ধা অনেকেই আছে। বাতিল হলে সবার নামই বাতিল হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের সম্মেলনে বজলুর রশিদ এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ পান। সাবেক এমপি শিল্পপতি আবদুুল মজিদ মন্ডল এই কমিটির সভাপতি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে বজলুর রশিদ জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করার জন্য মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১২ই মে জালালপুর ইউনিয়নে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির ১১ নম্বর সদস্য ছিলেন বজলুর রশিদের বাবা জয়নাল আবেদিন। সে সময় ১৫ বছর বয়সী বজলুর রশিদ পাশের স্থল পাকড়াশী ইন্সটিটিউটের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তখন বাবাকেই কাজে সহযোগিতা করতেন তিনি। এলাকার কেউ তাকে কখনো মুক্তিযুদ্ধ করতে দেখেনি। ৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান তালিকা মুক্তিবার্তায় (লাল বই) তার নাম নেই। প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত সনদও নেই। তবে ২০০৪ সালে প্রকাশিত গ্রেজেটে বজলুর রশিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রনালয়ের সনদ নম্বর-ম ৭৬২৩, স্মারক নম্বর-১৫৫, তারিখ-২৭/১১/২০০২। ভাতা বই নম্বর-৩২৮।উৎস -মানব জমিন