জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 370 বার
জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ভোটার ও এনআইডি কার্ড বানিয়ে দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীনকে (১৬ সেপ্টেম্বর) সোমবার রাতে এক মহিলাসহ গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যজন হলেন বিজয় দাস (২৬)। তিনি পটিয়ার ভাটিখাইন লালমোহন বাড়ির প্রয়াত হারাধন দাসের ছেলে। আরেকজন হলেন বিজয় দাসের বোন সীমা দাস ওরফে সুমাইয়া জাহান। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলাও হয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করে বাঁশখালী পৌর সদরে জমি, বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ, ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অনেক সহায় সম্পত্তির মালিক হয়েছেন খুব কম সময়ে জয়নাল আবেদীন।
বাঁশখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আসকরিয়া পাড়ায় টিনসেট পাকা বাড়ি ছাড়াও বর্তমানে আসকরিয়া শাহ্্ মাজারের দক্ষিণে নতুন সাড়ে তিন গন্ডা জমির উপর তৈরি করা হচ্ছে ছয় তলার বিশাল অট্টালিকা ভবন। ইতিমধ্যেই চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাঁশখালী পৌরসভায় রয়েছে ক্রয় করা জমি। তার রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে ব্যাংক একাউন্ট।
১৪ বছর পূর্বে অফিস সহকারী (পিওন) হিসাবে নির্বাচন কার্যালয়ে যোগদান করেন। বর্তমানে ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। তার এই অবৈধ সম্পদ দেখভালের জন্য রাখা হয়েছে বাহাদুর নামের একজন লোকও।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে নির্বাচন কার্যালয় থেকে একটি ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়া এই ল্যাপটপ থেকে রোহিঙ্গাদের ভোটার করতে সহায়তা করেন জয়নুলসহ অন্যরা। এই ল্যাপটপ হারিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলেই জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ভোটার করার রহস্য উন্মোচন হয়।
সরেজমিনে আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আসকরিয়া পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আসকারিয়া পাড়ায় নতুন নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন করা মো. মোস্তফা আলী ও জয়নাল আবেদীনের সুসম্পর্কের কারণে একই স্থানে দু’জনে মিলে একই মালিক থেকে সাড়ে ৮ গন্ডা জমি ক্রয় করেন। সীমানা ঘেরা জায়গার পাশেই নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীন গত দু’মাসেই মাটি পরীক্ষা করে পাইলিং এর মাধ্যমে ছয়তলা ভবনের চারতলার কাজ সম্পন্ন করেন। শ্রমিকরা দিনে রাতেই নির্মাণ কাজ করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
বাঁশখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হারুন বলেন, জয়নাল আবেদীনের পিতা মোনাফ মাঝি খুবই দরিদ্র ছিল। ২০ বছর পূর্বে তিনকড়া জমির উপর শুধু বসত ভিটিই ছিল। অর্থের অভাবের কারণে ছেলে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারেনি। আত্মীয়ের মাধ্যমে নির্বাচন অফিসে পিওনের চাকুরী হয় জয়নুলের। সে অনেক রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দিয়েছে বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। জয়নাল আবেদীন বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক। তার ভাই এক সময় বাবুর্চির কাজ করেছে। বর্তমানে দুবাই থাকে। রোহিঙ্গারা ওইখানে গিয়ে অবস্থান নেয়। গত ছয় মাসে আত্মীয় স্বজন ও ভিন্ন ভিন্ন নামে জলদীসহ বিভিন্ন স্থানে অনেক জায়গা ক্রয় করেছে। যে বাড়িটি তৈরি হয়েছে সবকিছু মিলে অন্তত ৬০-৭০ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে ব্যয় হয়ে গেছে। তার জলদীতে ক্রয় করা জমি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে কোটি টাকার জমি রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে ভিন্ন ভিন্ন নামে টাকা রয়েছে।
Leave a Reply