অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 450 বার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ভুল চিকিৎসায় আমান্তিকা নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক ভাংচুর করেছে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। সোমবার দুপুরে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সোনারগাঁও জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ স্বজনরা ক্লিনিকের পরীক্ষাগার, মেশিনপত্র, গ্লাস, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ঘটনার পর ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ স্বজনদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বড় সাদিপুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার স্ত্রী আমান্তিকা গর্ভবতী হলে নিয়মিত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকালে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. নূরজাহান বেগম ওইদিন রোগীকে সিজার করার পরামর্শ দেন। তিনি নিজেই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তার সিজার করান।
এ সময় আমান্তিকার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তাড়াহুড়া করে সিজারের পর ওই রোগীর পেটে গজ কাপড় রেখেই ডা. নূরজাহান কাটা স্থান সেলাই করে দেন। সিজারের পর রোগীর অনবরত বমি ও পেটে অস্বস্থি তৈরি হয়ে পেট ফুলে যায়।
পুনরায় ওই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি নারায়ণগঞ্জ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ডাক্তার নূরজাহান কেয়ার হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় ওই রোগীর সিজার করিয়ে জরায়ু কেটে ফেলেন।
রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকার গেণ্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সোমবার ভোরে ওই গৃহবধূ মারা যান।
পরে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা দুপুরে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভাংচুর করে। ঘটনার পর ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায়।
নিহত আমান্তিকার স্বামী মো. পিন্টু মিয়া জানান, বন্দর উপজেলার কল্যাণদী গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে আমান্তিকার সঙ্গে ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট তার বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার জন্য তার স্ত্রীকে হারাতে হয়েছে। তিনদিনের মাথায় তার কন্যাসন্তান এতিম হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে দোষী ডাক্তারকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন তিনি।
নিহতের বাবা সোহেল মিয়া জানান, শুক্রবার আমার মেয়েকে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার সিজার করার পরামর্শ দেন। জরুরি সিজার না করলে মা ও পেটের সন্তান মারা যাবে বলে জানিয়েছিলেন। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আমরা সিজারের সিদ্ধান্ত নেই।
তিনি বলেন, ওইদিন ডাক্তার নূরজাহান আরও ৪টি সিজার করেছেন। পাশাপাশি রোগীর দীর্ঘ লাইন। ডাক্তার তাড়াহুড়া করে সিজারের পর পেটে গজ কাপড় রেখে সেলাই করায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে বিচার দাবি করি।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাংচুর হয়েছে। বিক্ষুদ্ব্ধ স্বজনদের পুলিশ বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
Leave a Reply