ভারতে সদ্য প্রকাশিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা যে পর্বতের মূষিক প্রসব হয়েছে তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। এবার তার সরাসরি প্রমাণ মিলল।‌ চূড়ান্ত তালিকায় নাম নেই ১৯ লক্ষ মানুষের। যার সিংহভাগ হিন্দু বাঙালি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবার থেকে বিরোধী দলের বিধায়ক, কার্গিল যোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিজন অনেকেই বাদ পড়েছেন। এবার সেই বাদের তালিকায় বাড়তি সংযোজন হল, অসমের আরও এক বিশিষ্ট ব্যক্তির। চন্দ্রপৃষ্ঠ স্পর্শ করবে ভারতের গর্বের চন্দ্রযান–২। আর সেই কর্মযজ্ঞেরই একজন অন্যতম অংশীদারের নাম বাদ পড়ল এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা থেকে। ড. জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী। যিনি চন্দ্রযান ২–এর অন্যতম উপদেষ্টা। আর তাঁরই নাম নেই চূড়ান্ত তালিকায়। মোদি সরকারের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এখন লজ্জার বিষয় ভারতবাসীর কাছে। জাতির লজ্জা।

এই নিয়ে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে উত্তর–পূর্বের রাজ্যে। সেই তালিকায় নাম নেই বিজ্ঞানী জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ওই বিজ্ঞানী নিজে মিশন চন্দ্রযানের সঙ্গে যুক্ত। প্রকল্পের অন্যতম উপদেষ্টা। তিনি জানান, ‘আমরা গত ২০ বছর ধরে আহমেদাবাদে থাকি। কিন্তু কোনওভাবে আমার এবং পরিজনদের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে। আমার পরিবারের অনেকে এখনও অসমে থাকেন। জোরহাটে আমাদের জমিজমাও রয়েছে। ১৯৫০ সালের ১৮ নভেম্বর অসমেই জন্ম আমার।’
এখন নাগরিকত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আঁধারে বিজ্ঞানী জিতেন্দ্রনাথ। আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে চান তিনি। উল্লেখ্য, তাঁর দাদা হিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ। জিতেন্দ্রনাথবাবু জানান, ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁর পরামর্শ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে। ইসরোর মিশন মঙ্গলযান প্রকল্পের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিজ্ঞানী জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী। গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে স্নাতক হন বিএসসি নিয়ে। তারপর এমএসসি করেন গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তারপর পিএইচডি।