পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের আনন্দে মাতবে সারাদেশ।ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল এ উৎসবে মুসলমানরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী পশু কোরবানি দেবেন। কোরবানীর ঈদের দিন মহান সৃষ্টিকর্তা, পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার প্রতি ত্যাগ ও আনুগত্য প্রদর্শণ করতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা দিনের শুরুতেই ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। তারপর আল্লাহর নামে পশু কোরবানী দেবেন।

তবে উৎসবের বাতাবরণে ভয় জাগাচ্ছে সারাদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু। রয়েছে বন্যার ক্ষত ও নতুন করে বন্যার পূর্বাভাস নিয়ে উদ্বেগ।
তবু ঈদ বলে কথা। ঈদ মানে খুশি। পাশাপাশি কোরবানির ঈদ ত্যাগেরও। বন্যা ও ডেঙ্গুতে যাদের হারিয়েছি, তাদের জন্য দোয়া করতে হবে। ঈদের খুশিতে তাদের যেন ভুলে না যাই।
পবিত্র কোরআনের বর্ণনানুযায়ী, চার হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার সবচেয়ে প্রিয় নিজ সন্তান হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার উদ্যোগ নেন। তবে আল্লাহর কুদরতে হজরত ইসমাইলের (আ.) পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। হজরত ইব্রাহিমের (আ.) এই ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্মরণ করে প্রতিবছর মুসলমানরা কোরবানি করেন। তবে আল্লাহর পথে ত্যাগই ঈদুল আজহার প্রধান শিক্ষা। পশু জবাই করে তা বিলিয়ে দেওয়া দান নয়, ত্যাগ। কবি নজরুল বলেছেন, ‘চাহি নাকো দুম্বা উট, কতটুকু দান? ও দান ঝুট। চাই কোরবানি, চাই না দান।’

সামর্থ্যবানরা নিজেদের নামে, প্রিয়জনের নামে পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে সচেষ্ট হবেন। যাদের সামর্থ্য নেই তারাও বাদ যাবেন না ঈদের আনন্দ থেকে। কোরবানির মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করার বিধান রয়েছে ইসলামে। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হলেও পরের দু’দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ তারিখেও পশু কোরবানি দেওয়া যায়। সেই হিসাবে আগামী মঙ্গল ও বুধবারও কোরবানি করা যাবে।

পছন্দের পশু কোরবানি করতে সবার এখন ‘গরুখোঁজা’ দশা। সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে সেরা গরু, ছাগল কেনার জন্য ছুটছেন হাট থেকে হাটে। কয়েক বছর ধরে অনলাইনেও বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু। তাই পশুর খোঁজে কেউ কেউ চোখ রাখছেন কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে। সংখ্যায় বেশি না হলেও বাজারে রয়েছে দুম্বা ও উট। কেউ কেউ মরুভূমির প্রাণী উটও কোরবানি করবেন।